নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র ও বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে নমুনা ডিম ছাড়ছে কার্প জাতীয় মা মাছ বলে জানিয়েছেন হালদা গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম।
গতকাল সোমবার (৬ মে) দুপুর ২টা থেকে মঙ্গলবার (৭ মে) ভোর ৪টা পর্যন্ত টানা ভারী ও হালকা বৃষ্টিপাত এবং বজ্রপাতের কারণে হালদা নদীতে জোয়ার-ভাটার সময় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছেরা। উপজেলার উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের রামদাশ মুন্সির হাট, মাছুয়াঘোনা, আমতুয়া গড়দোয়ারা ইউনিয়নের নয়াহাট এলাকার কিছু অংশে নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ।
তবে সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছর এপ্রিল থেকে মে মাসের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কার্প জাতীয় (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউস) মাছ ডিম ছাড়ে। ১০৬ কিলোমিটার দীর্ঘ নদীটিতে এবার ডিম ছাড়ার ১টি উপযুক্ত সময় চলে গেছে। এখন পর্যন্ত হালদায় ডিম ছাড়েনি কার্প জাতীয় মাছ।
ডিম সংগ্রহে নিয়োজিতরা বলছেন, এ বছর এপ্রিল মাস চলে গেলেও মা মাছে ডিম ছাড়ার সম্ভাব্য সময়গুলোর মধ্যে ৪ থেকে ৮ মে আগেই নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ।
এছাড়াও আগামী ১৬ থেকে ২২ মে, ১ জুন থেকে ৬ জুন, ১৬ জুন থেকে ১৯ জুন হালদা নদীতে পুরোদমে কার্পজাতীয় মাছ ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নের নয়ারহাটকুম এলাকার বাসিন্দা ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর বলেন, গতকাল সোমবার দুপুর ২টা থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টা পর্যন্ত টানা ভারী ও হালকা বৃষ্টিপাত এবং বজ্রপাতের কারণে হালদা নদীতে জোয়ার আসাই মা মাছ ডিম ছেড়েছে।আমরা যারা ডিম সংগ্রহ করি সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ও হালদা গবেষক
ড. মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টা পর্যন্ত ভারী ও হালকা বৃষ্টিপাত এবং বজ্রপাতের কারণে হালদা নদীতে মেজর কার্পজাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়ছেন।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে হালদার মৎস্য সম্পদের উপর। এর প্রভাবে বিগত কয়েক বছর হালদা থেকে সংগৃহীত ডিমের পরিমাণ ব্যাপকহারে কমেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের (এল নিনোর প্রভাব) ফলে সৃষ্ট উচ্চ তাপমাত্রা (৫০ বছরের মধ্যে অধিক) ও ব্রজসহ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় হালদা নদীতে ডিম ছাড়ার অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় বিগত এপ্রিল মাসের দুটি তিথীতে/জো’তে (অমাবস্যার ও পূর্ণিমার) ডিম ছাড়েনি কার্পজাতীয় মা মাছ। এই জলজ বাস্তুতন্ত্রে রয়েছে ৯৩ প্রজাতির মাছ, চিংড়ি ও গাঙেয় ডলফিন।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, শুনেছি হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ছে। তবে সঠিক কোন তথ্য পায়নি।