নিজস্ব প্রতিবেদক:
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সক্রিয় ডাকাত দলের ১০ জন সদস্যকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্র ও গুলিসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
শনিবার (৮ এপ্রিল) মধ্যে রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের কে আটক করা হয়।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী মিডিয়া পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার বলেন, গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ফৌজদারহাট কালুশাহ মাজার সংলগ্ন মহাসড়ক এর আশেপাশে অবস্থান নিয়েছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ৮ এপ্রিল মধ্যে রাতেং র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ০১। নুরে আলম @নুরু (২৬), পিতা- মৃত ওসমান আলী, সাং- বাড়িগ্রাম, থানা- বাঁশাখালী, জেলা- চট্টগ্রাম, ০২। মোঃ হায়দার আলী (২৬), পিতা- আব্দুল আলী, সাং- উত্তর মাছিমপুর, থানা- সুধারাম, জেলা- নোয়াখালী, ০৩। রিমন মজুমদার (২২), পিতা- শীতল মজুমদার, গ্রাম- মধ্যম বারখাইন, থানা- আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম, ০৪। মোঃ রবিউল @ রুবেল (২৪), পিতা- মোঃ শমসের আলম, সাং- সন্ন্যাসী, থানা-মোড়লগঞ্জ, জেলা- বাগেরহাট, ০৫। মোঃ মামুন (২২), পিতা- মোঃ কামরুল ইসলাম, গ্রাম- বাহারছড়া, থানা- বাঁশখালী, জেলা- চট্টগ্রাম, ০৬। মোঃ বাদশা (২৮), পিতা- মোঃ আনোয়ার হোসেন, গ্রাম- আনন্দ বাজার, থানা- বন্দর, চট্টগ্রাম মহানগরী, ০৭। মোঃ শামীম (২৬), পিতা- আব্দুল হাকিম, সাং- সুন্দরীপাড়া, থানা- হালিশহর, চট্টগ্রাম মহানগরী, ০৮। মোঃ রাকিব (২৬), পিতা- মোঃ লোকমান, সাং- কলশি বড়পুল, থানা- বন্দর, চট্টগ্রাম মহানগরী, ০৯। মোঃ শাহাদৎ (২৫), পিতা- মোঃ ইব্রাহিম, গ্রাম- বাংশা, থানা- চাটখিল, জেলা- নোয়াখালি, ১০। মোর্শেদ খান @ হৃদয় (২৪), পিতা- নুরন্নবী, গ্রাম- পাক্কারমাথা, থানা- সীতাকুন্ড, জেলা- চট্টগ্রাম’দেরকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীদের হেফাজতে থাকা এবং তাদের নিজ হাতে বের করে দেয়া মতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি এবং ধারালো চাকু উদ্ধারসহ আসামী’দেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, এই ডাকাত দলটি হাইওয়ে ডাকাতির সাথে জড়িত। এ দলের বেশিরভাগ সদস্যই চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা এবং জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় ডাকাতি করতে জড়ো হয়েছিল। তারা সবাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি করার জন্য কালু শাহ মাজার সার্কেলের পাশে ন্যানো ফ্যাক্টরি কর্পোরেশনের কাছে অপেক্ষারত ছিল। তারা বর্ণিত স্থানে পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখী সাধারন মানুষের চলাচলের স্থানে পথচারীকে আটক করে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদেরকে জিম্মি করে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা-পয়সা ছিনতাই/ডাকাতি করে থাকে বলে নিজ মুখে স্বীকার করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বর্ণিত ডাকাত দলের সদস্যরা সেডান/মাইক্রোবাস এ ধরনের যানবাহন থামিয়ে ডাকাতি করার পরিকল্পনা করছিল। তারা আকস্মিক আক্রমণ করে যত দ্রুত সম্ভব সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত দলের নেতা জানায়, রমজান মাস এবং ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে সাধারণ মানুষ প্রায়ই মোটা অংকের টাকা নিয়ে চলাচল করে, বিশেষ করে যারা ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত করে তারা ডাকাত দলের মূল টার্গেট। এছাড়াও তাদের কাছে সীতাকুন্ড এলাকার এক ব্যবসায়ীরও ব্যবসাস্থল হতে নগদ টাকাসহ গমনাগমনের তথ্য ছিল, যিনি বায়েজিদ লিংক রোড ব্যবহার করে শহরের এলাকায় যাওয়ার কথা। তারা বিভিন্ন ভাবে ও সময়ে স্থান পরিবর্তন করে ওই ব্যবসায়ীসহ ২-৩টি হাইওয়েতে ডাকাতি করার পরিকল্পনা করেছিল।
উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত ডাকাত দলের ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় বিভিন্ন ধারায় ফৌজদারি মামলা পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।