নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে মুসলিম সম্প্রদায় ঈদুল আজহা উদ্যাপন করছেন। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুয়ায়ী পশু কোরবানি করা শুরু করেছেন।
রবিবার (১০ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে ঈদুল আজহার নামাজ শুরু হয়।
নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকেই যান কবরস্থানে। চিরবিদায় নেয়া স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অশ্রুসজল চোখে এ আনন্দের দিনে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে আকুতি জানান।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীসহ বিশ্বের সব মুসলমানকে আন্তরিক অভিনন্দন ও মোবারকবাদ জানিয়ে আলাদা বাণীও দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। ‘আজহা’ অর্থ কোরবানি বা উৎসর্গ করা। ঈদুল আজহা উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে চরম ত্যাগ ও প্রভুপ্রেমের পরাকাষ্ঠা। মহান আল্লাহর নির্দেশে স্বীয় পুত্র হজরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করতে উদ্যত হয়ে হজরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর প্রতি অগাধ ভালোবাসা, অবিচল আনুগত্য ও অসীম আত্মত্যাগের যে সুমহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা ইতিহাসে অতুলনীয়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কোরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে। আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন ‘আমি প্রত্যাশা করি, প্রতিবারের মতো এবারও ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জীবনে সুখ ও আনন্দের বার্তা বয়ে আনবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, হজরত ইব্রাহিম (আ.) মহান আল্লাহর উদ্দেশে প্রিয় পুত্রকে উৎসর্গের মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি লাভে যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, তা বিশ্ববাসীর কাছে চিরকাল অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।
গতবারের মতো এবারও করোনার বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদ্যাপন করবেন মুসলমানরা। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস রোধে ধর্ম মন্ত্রণালয় এবারও আট দফা নির্দেশনা জারি করেছে।
করোনা সংক্রমণ রোধে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপন ও ঈদের নামাজে স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান জানিয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা আট দফা নির্দেশনায় হয়েছে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপন উপলক্ষে কোনো ধরনের আলোকসজ্জা করা যাবে না। প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে অজু করে ঈদগাহে ও মসজিদে আসার কথা বলা হয়। নির্দেশনা বাস্তবায়নে খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।