নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই থানার প্রতারণামূলকভাবে ধর্ষণ ও টাকা আত্মসাৎ মামলার আসামী মোঃ আতিকুর রহমান(৩৯)’কে র্যাব-৭ ও র্যাব-১৩ এর যৌথ অভিযানে রংপুর হতে গ্রেফতার।
গত বুধবার (৩ মে) বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী মিডিয়া পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার বলেন, ভুক্তভোগী ভিকটিমের বাবা রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই থানাধীন কর্ণফুলী পেপার মিলস এ চাকুরী করতেন। বাবার চাকুরীর সুবাদে ভিকটিম তার মা-বাবার সাথে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই থানাধীন চন্দ্রঘোনা এলাকায় বসবাস করতে। ২০১৮ সালে ভিকটিমের বাবা চাকুরী থেকে অবসর গ্রহন করেন এবং ২০১৯ সালে কেপিএম এলাকায় বসবাস করাকালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করে। বাবার মৃত্যুর পর তার পেনশনের টাকা ভিকটিম এবং তার বড় ভাই বন্টন করে নেয়। আসামী মোঃ আতিকুর রহমানও কর্ণফুলি পেপার মিলে চাকুরী করত এবং ভিকটিমদের বাসার কাছাকাছি তার বাসা হওয়ার সুবাধে ভিকটিমের সাথে তার পরিচয় হয়। আতিকুর বিবাহিত হওয়া স্বত্বেও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে তার বিবাহিত স্ত্রী থাকার কথা গোপন করে ভিকটিমের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে।
প্রেমের সম্পর্কের সুবাদে আতিকুর প্রায়ই ভিকটিমদের বাসায় আসা যাওয়া করত। গত ২২ মে ২০১৯ইং এবং ০৩ জুন ২০১৯ইং তারিখে আতিকুর ভিকটিমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। ভিকটিমের কাছে তার পিতার পেনশনের টাকা আছে জানতে পেরে চতুর আতিকুর ব্যবসার কথা বলে ভিকটিমের নিকট টাকা ধার চায়। ভিকটিম সরল বিশ্বাসে আতিকুরকে গত জুলাই ২০১৯ সালে হতে জানুয়ারি ২০২২ মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মোট ১০ লাখ ৩১ হাজার টাকা প্রদান করে।
পরবর্তীতে ২০২২ সালে জুলাই মাসে ভিকটিম জানতে পারেন আতিকুর বিবাহিত এবং প্রতারণা করে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ এবং তার টাকা আত্মসাৎ করেছে। কিছুদিন পর ভিকটিম তার টাকা ফেরত চাইলে আতিকুর বিভিন্ন বাহানায় সময় ক্ষেপন করতে থাকে। টাকা উদ্ধারের কোন উপায় না পেয়ে ভিকটিম প্রতারক আতিকুরের বিরুদ্ধে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-০৩/১১ তারিখ-১৩ এপ্রিল ২০২৩ খ্রিঃ ধারাঃ ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সং/২০০৩) এর ৭/৯(১) তৎসহ ৩০৬/৪২০ পেনাল কোড ১৮৬০। মামলা রুজুর পর হতে প্রতারক আতিকুর আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম প্রতারণামূলকভাবে ধর্ষণ ও টাকা আত্মসাৎ মামলার আসামী মোঃ আতিকুর রহমানকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে বর্ণিত প্রতারক আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে রংপুর মহানগরীর কোতয়ালী থানাধীন কামলা কাছলা এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে গত ৩ মে র্যাব-৭ এবং র্যাব-১৩ এর যৌথ আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ আতিকুর রহমান (৩৯), পিতা- মৃত হাবিবুর রহমান, সাং-গয়েসপুর, থানা- পলাশ, জেলা- নরসিংদী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, সে উক্ত ধর্ষন ও প্রতারণা মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামী এবং উক্ত ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃত্ত ছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।