নোটিশ :
hathazarinews.com ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম...
সংবাদ শিরোনাম:
ফরহাদাবাদে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার কে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে: উপদেষ্টা ফারুক ই আজম হাটহাজারীতে আগুনে পুড়লো ৪ পরিবারের বসতঘর পণ্ডিত স্বর্ণময় চক্রবর্তীর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন হাটহাজারীতে বন্যা দূর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার  ফরহাদাবাদের বংশালে বন্যা কবলিত ভাইকে দেখতে গিয়ে বোনের মৃত্যু ফরহাদাবাদে মধ্যে রাতে বন্যার পানি ঘরে: মালামাল বের করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট যুবক নিহত হাটহাজারীতে নির্মাণাধীন ভবনে পড়েছিল ব্যবসায়ীর লাশ বীর মুক্তিযোদ্ধা এলএমজি মাহাবুর ইন্তেকাল  নরমাল ডেলিভারিতে ৮ নবজাতকের জন্ম হাটহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রবিবার থেকেই হাটহাজারী মডেল থানার পুলিশি কার্যক্রম শুরু: ওসি মনিরুজ্জামান 
কিশোর গ্যাংয়ের আতংকের নাম“ডট গ্যাং”গ্রুপের প্রধান মিমসহ আটক ৬: জড়িত নাজিরহাট-ফটিকছড়ির যুবক!

কিশোর গ্যাংয়ের আতংকের নাম“ডট গ্যাং”গ্রুপের প্রধান মিমসহ আটক ৬: জড়িত নাজিরহাট-ফটিকছড়ির যুবক!

কিশোর গ্যাংয়ের আতংকের নাম“ডট গ্যাং”গ্রুপের প্রধান মিমসহ আটক ৬: জড়িত নাজিরহাট-ফটিকছড়ির যুবক!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজার, ফটিকছড়ি ও রাউজানে কিশোরদের জড়িত চট্টগ্রাম মহানগরীর আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর “ডট গ্যাং” নামক কিশোর গ্যাং গ্রুপের প্রধান মিমসহ তার ৬ সহযোগী আটক।

 

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১০টার দিকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের কে আটক করা হয়।

র্যাব ৭ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মাহবুব আলম পিপিএম, পিএসসি বলেন,  সারা দেশে কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন ছত্রছায়ায় নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে খুনাখুনিসহ নানা অপরাধে কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসা ও দখলবাজিতেও তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। নানা অপরাধে জড়িয়ে কিশোররা ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। অধিকাংশ কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠার পেছনে স্থানীয় এলাকার একটি চক্রের মদদ রয়েছে। ‘হিরোইজম’ প্রকাশ করতেও পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠছে।

চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৬ টি থানা এলাকায় বিভিন্ন নামে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশতাধিক কিশোর গ্যাং। যারা জড়িয়ে পড়েছে দখলবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে। সেবন করছে ইয়াবা, ফেন্সিডিলসহ নানা মাদকদ্রব্য। আধিপত্য বিস্তারে ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ অস্ত্রও। গত এক দশকে চট্টগ্রাম শহরের জামালখান এলাকায়ও একাধিক কিশোর গ্যাংয়ের উত্থান ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিভিন্ন ছত্রছায়ায় এসব গ্রুপের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এদের অত্যাচারে যেন সাধারণ মানুষ তথাঃ রিকশা চালক, সিএনজি চালক, ফুটপাত ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং স্কুলছাত্র-ছাত্রীসহ মহানগরীর বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অতিষ্ঠ হয়েছে পড়ছে।

এরই আলোকে গত কয়েকদিন যাবৎ র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর উল্লেখিত ঘটনার ব্যাপারে অভিযোগের প্রেক্ষিতে উক্ত কিশোর গ্যাং সদস্যদেরকে প্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। নজরদারীর একপর্যায়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মহনগরীর এলাকার একটি গ্রুপ ফেসবুক আইডি খুলে তাদের বিভিন্ন অপকর্মের স্থির চিত্র এবং ভিডিও চিত্র ধারন করে আপলোড করেছে। পরবর্তীতে বিশেষ একটি তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি. তারিখ আনুমানিক ১০০০ ঘটিকায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম মহানগরীর বালি আর্কেড শপিং সেন্টারের সামনে নবাব সিরাজউদৌলা রোড, চকবাজার এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে “ডট গ্যাং” নামের একটি সক্রিয় কিশোর গ্যাং গ্রুপের ০৭ জন্য সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সামনে আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় তাদের গ্রæপে আনুমানিক ৪০ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে। তাদের মধ্যে ০৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে যাদের নাম ঠিাকানাঃ ০১। হোসাইনুল আমিন মিম (১৬), পিতা-নুরুল আমিন, সাং-আজমনগর, ডাকঃ-বদরখালী, থানা-চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার, ০২। সামিউল ইসলাম(১৬), পিতা-আমিন উল্লাহ, সাং-নাজির হাট, ডাক-নাজিরহাট, থানা-ফটিকছড়ি, জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমানে-এস ভিলা, ডিসি রোড, থানা-চকবাজার, চট্টগ্রাম মহানগর, ০৩। আহনাফ শাহরিয়ার(১৬), পিতা-এসএম মহিউদ্দিন, সাং-হাজির হাট, ডাকঃ-ইকবাল পার্ক, থানা-বোয়ালখালী, জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমানে জহির ব্রাদার্স এর গলি, সাদিয়া ম্যানশন, থানা-চকবাজার, চট্টগ্রাম মহানগর, ০৪। মোঃ শরিফুল ইসলাম(১৬), পিতা-মোঃ জাকারিয়া, সাং-বারবাকিয়া, থানা-পেকুয়া, জেলা-কক্সবাজার, বর্তমানে বহদ্দার হাট, বারাইপাড়া-০৬ নং ওয়ার্ড, থানা-চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম মহানগর, ০৫। শানিপ শাহীদ(১৬), পিতা-মোঃ শহিদুল্লাহ, সাং-ঈদগাঁ, থানা-ঈদগাঁ, জেলা-কক্সবাজার, বর্তমানে- নুরজাহান ভিলা, ৪র্থ তলা, ৪০২ দেবপাহাড়, থানা-চকবাজার, চট্টগ্রাম মহানগর, ০৬। মাশহাদ সিদ্দিকী(১৬), পিতা-শাহাজাহান সিদ্দিকী, সাং-শান্তি হাট, ধর্মপুর, থানা-ফটিকছড়ি, জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমানে চেয়ারম্যান ঘাটি, বাছুরতলা, থানা-চকবাজার, চট্টগ্রাম মহানগর এবং ০৭। আবু তারেক(১৬), পিতা-মোঃ তাহের মিয়া, সাং-উত্তর গশ্চি, ডাক-দেওয়ানপুর, থানা-রাউজান, জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমানে ৮ নং হাসমত উল্লাহ লেইন, থানা-চকবাজার, চট্টগ্রাম মহানগর এবং বাকিদের গ্রেফতারের কার্যক্রম চলমান আছে।

ক। গ্রেফতারকৃত আসামী হোসাইনুল আমিন@মিম (১৬) মুলত এই গ্রুফটি লিড দিত। “ডট গ্যাং” নামের ফেসবুক এবং হোয়াটস্যাপ গ্রুপ সে নিজে কন্ট্রোল করতো। সে ছিলো চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার এলাকার ত্রাশ। মিমের নেতৃত্বে এই গ্রুপটি চট্টগ্রামের জামালখান এবং চকবাজার এলাকায় অনেক ছিনতাই, চাঁদাবাজি এবং হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তার নামে চট্টগ্রামের চকবাজার থানায় একটি সাধারন ডায়েরী লিপিবদ্ধ আছে। মিমের বাবা একজন ডাক্তার এবং মা চাকুরিজীবী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে ছিলো ছোট।

খ। গ্রেফতারকৃত আসামী মাশহাদ হোসেন (১৬) “ডট গ্যাং” কিশোর গ্রুপের একজন এক্টিভ সদস্য। মিমের পরেই ছিলো তার অবস্থান। মাশহাদ এবং মিম একই স্কুলে পড়া লেখা করেছে সেই সুবাধে তাদের পরিচয়। মাশহাদ চট্টগ্রামের জামালখান এবং চকবাজার এলাকায় অনেক ছিনতাই, চাঁদাবাজি এবং হতাহতের ঘটনায় মিমের সাথে সক্রিয়ভাবে থেকে কাজ করেছে। মাশহাদের বাবা এবজন প্রবাসী এবং মা গৃহিণী। ০৩ ভাই বোনের মধ্যে মাশহাদ ছিলো ছোট।

তিনি বলেন,  গ্রেফতারকৃত আসামী সামিউল আমিন (১৬) “ডট গ্যাং” কিশোর গ্রুপের একজন সদস্য। সে এই গ্রæপের সাথে থেকে চট্টগ্রামের জামালখান এবং চকবাজার এলাকায় ৪/৫ টি মারামারিতে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলো। সামিউলের বাবা পেশায় একজন মুদি দোকানদার এবং মা গৃহিণী। পরিবারের ০৩ ভাই বোনের মধ্যে সামিউল ছিলো সবার ছোট।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ তারিক মিয়া (১৭) “ডট গ্যাং” কিশোর গ্রুপের একজন সদস্য। সে এই গ্রæপের সাথে থেকে চট্টগ্রামের জামালখান এবং চকবাজার এলাকায় অনেক মারামারিতে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলো। তারিকের বাবা পেশায় একজন হোমিও প্যাথি ডাক্তার এবং মা গৃহিণী। পরিবারের ০৫ ভাই বোনের মধ্যে তারিখ ছিলো সবার ছোট।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামী শানিপ শাহিদ (১৬) “ডট গ্যাং” কিশোর গ্রুপের একজন সদস্য। সে চট্টগ্রামের জামালখান এবং চকবাজার এলাকায় এই গ্রæপের সাথে থেকে বেল্ট, স্টিক ইত্যাদি দিয়ে মারামারির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলো। এরুপ কাজের জন্য র‌্যাব কর্তৃক প্রেফতারের সময় তার মা-বাবা বলেছেন যে তার ছেলে অন্যায় কাজের সাথে লিপ্ত আছেন এবং গ্রেফতার করেত উৎসাহ করেছেন। শানিপ শাহিদের বাবা ইয়াং ওয়াং কোম্পানীর একজন সিনিয়র ম্যানেজার এবং মা গৃহিণী।

তিনি বলেন,  গ্রেফতারকৃত আসামী আহনাফ শাহারিয়ার (১৬) “ডট গ্যাং” কিশোর গ্রুপের একজন সদস্য। সে চট্টগ্রামের জামালখান এবং চকবাজার এলাকায় এই গ্রæপের সাথে বিভিন্ন সময় মারামারির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলো। আহনাফের বাবা একজন সিএনজি চালক এবং মা গৃহিণী। পরিবারের ০৩ ভাই বোনের মধ্যে সে ছিলো ছোট।

তিনি বলেন,  গ্রেফতারকৃত আসামী শরিফুল ইসলাম (১৭) “ডট গ্যাং” কিশোর গ্রুপের একজন সদস্য। সে চট্টগ্রামের জামালখান এবং চকবাজার এলাকায় এই গ্রæপের সাথে থেকে আনুমানিক ১০টি মারামারিতে অংশগ্রহণ করেছে। শরিফুলের বাবা পদ্মা অয়েল কোম্পানীতে চাকুরীরত এবং মা গৃহিণী। পরিবারের ০৪ ভাই বোনের মধ্যে সে ছিলো সবার ছোট।

তিনি বলেন,  আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সবাই চট্টগ্রামের স্বনামধন্য স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ০২ জন, চট্টগ্রাম মুসলিম সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ০২ জন এবং নাসিরাবাদ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ০২ জনসহ সর্বমোট ০৬ জন ছাত্র।

তিনি আরও বলেন,  তারা সবাই চট্টগ্রামের একটি কোচিং সেন্টারের নিয়মিত ছাত্র ছিলো। সেখানে থেকে তাদের সবার সাথে পরিচয় এবং একসাথে চলা ফেরা ও আড্ডা দেওয়া শুরু হয়। আড্ডা দেওয়ার সময় কথিত একটি গ্রুপ তাদের কাজে কর্মে বাধা দিতে থাকে এবং অনেক মারধরও করে। মূলত এখান থেকেউ “ডট গ্যাং” গ্রুপটির সৃষ্টি ও কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম থেকেই গ্রুপটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল ধৃত ১নং আসামী “হোসাইনুল আমিন মিম”। “হোসাইনুল আমিন মিম” তার নিজের নামের একটি পেইজ এবং হোয়াটস্যাপ এ একটি গ্রæফ তৈরী করে সেখানে তাদের কার্যক্রমের বিভিন্ন স্থীর চিত্র এবং ভিডিও চিত্র আপলোড করত। তারা তাদের সকল প্রকার অপকর্মে ভিডিও গুলো পেইজে আপলোড করে ফলোয়ার্স বাড়ানোসহ সুনাম এবং খ্যাতি অর্জন করতে চেয়েছিল। এছাড়াও তারা চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে ইভটিজিং, ছিনতাই, দখলবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ মূলক কর্মকান্ড সংগঠিত করেছে। তাদের এরুপ কর্মকান্ডে স্থানীয় বড় ভাইরা মদদ দিচ্ছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন




সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত,© এই সাইডের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ServerNeed.com