নোটিশ :
hathazarinews.com ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম...
সংবাদ শিরোনাম:
ফরহাদাবাদে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার কে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে: উপদেষ্টা ফারুক ই আজম হাটহাজারীতে আগুনে পুড়লো ৪ পরিবারের বসতঘর পণ্ডিত স্বর্ণময় চক্রবর্তীর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন হাটহাজারীতে বন্যা দূর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার  ফরহাদাবাদের বংশালে বন্যা কবলিত ভাইকে দেখতে গিয়ে বোনের মৃত্যু ফরহাদাবাদে মধ্যে রাতে বন্যার পানি ঘরে: মালামাল বের করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট যুবক নিহত হাটহাজারীতে নির্মাণাধীন ভবনে পড়েছিল ব্যবসায়ীর লাশ বীর মুক্তিযোদ্ধা এলএমজি মাহাবুর ইন্তেকাল  নরমাল ডেলিভারিতে ৮ নবজাতকের জন্ম হাটহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রবিবার থেকেই হাটহাজারী মডেল থানার পুলিশি কার্যক্রম শুরু: ওসি মনিরুজ্জামান 
ভালোবাসা দিবসে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে হোটেলে: বাক-বিতন্ডার সূত্রে হত্যা, হাটহাজারীতে ধরা ঘাতক স্বামী!

ভালোবাসা দিবসে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে হোটেলে: বাক-বিতন্ডার সূত্রে হত্যা, হাটহাজারীতে ধরা ঘাতক স্বামী!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ভালোবাসা দিবসে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে কক্সবাজারের হোটেলে নারীকে হত্যার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে খদ্দর মোস্তাফিজুর রহমানকে হাটহাজারী উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের চৌধুরী হাট থেকে আটক করে র‌্যাব-৭।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) রাত ৭টার দিকে তাকে আটক করা হয়।

র্যাব ৭ এর সিনিয়র সহকারী মিডিয়া পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার বলেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে কক্সবাজার পৌর শহরের বাজারঘাটা এলাকায় ‘সি বার্ড’ নামে একটি আবাসিক হোটেল থেকে একজন নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ভিকটিম এবং আসামী মোস্তাফিজুর রহমান স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি উক্ত হোটেলে উঠে। ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরের দিকে মোস্তাফিজুর রুমের বাইরে তালা দিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে ভেতরে আলো জ্বলতে দেখে হোটেল বয় ডাকাডাকি করে। কিন্তু কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পুলিশকে খবর দেয়া হলে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে সিআইডির একটি অপরাধ টিম ঘটনাস্থলে আসে এবং তথ্য নেয়া শেষ হলে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ঘটনার পর হতে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল হতে পলাতক ছিল।

এই হত্যাকান্ডের ঘটনা প্রকাশ্যে আসলে উক্ত ঘটনাটি দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। হত্যাকান্ডের ঘটনাটি প্রকাশ পেলে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ও প্রাথমিক তথ্যাদি সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে এই ঘটনা সংক্রান্তে র‌্যাব-৭, র‌্যাব-১৫ ও র‌্যাব ফোর্সেস গোয়েন্দা শাখা একযোগে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করলে আসামীর অবস্থান চট্টগ্রাম হিসেবে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান এর অবস্থান চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন চৌধুরীরহাট এলাকায় বলে জানা যায় এবং র‌্যাব-৭ এর একটি চৌকষ আভিযানিক দল গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক ৭টার দিকে বর্নিত স্থান হতে উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় হত্যা মামলার একমাত্র আসামি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (৫১), পিতাঃ আব্দুল জব্বার, সাং-আতাইকাঠী, থানা-বাগেরহাট সদর, জেলা-বাগেরহাট’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মোস্তাফিজ ভিকটিমকে হত্যার সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।

গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, নিহত নারীর সাথে সে বৈবাহিকভাবে সম্পর্কিত নয় তবে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারা হোটেলে গমন করেন। আসামীর নিজ ভাষ্যমতে, পূর্বেও কয়েকবার তিনি অন্যান্য নারীসহ ভোগবিলাসের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন হোটেলে সাময়িক সময়ের জন্য যাতায়াত করেছেন। তবে, এবার এই নারীকে নিয়ে হোটেল কক্ষে অবস্থানকালীন সময়ে বাক-বিতন্ডার সূত্র ধরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান উক্ত নারীর উপর চড়াও হন এবং একপর্যায়ে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে তাকে হত্যা করে হোটেল থেকে পালিয়ে যান।

হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ ভালোবাসা দিবসের সকাল ০৭:৫৮ ঘটিকায় সে উক্ত নারীসহ হোটেলে প্রবেশ করে। প্রবেশের মুহুর্তে নিহত নারীর পরনের কাপড় ও মৃতদেহের পরনীয় কাপড় একই বলে প্রতীয়মান। এছাড়াও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান এর চেহারা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।

গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তাফিজকে তল্লাশী করে তার পকেট থেকে আগ্রা ১০০ নামক সিলডেনাফিল গোত্রের যৌন উত্তেজক ঔষধ পাওয়া যায় এবং এ বিষয়ে তিনি বলেন, তার বয়স ৫১ বছর এবং নারীসঙ্গের জন্য এই ট্যাবলেট তার প্রয়োজন হয়। এছাড়াও আসামী মোস্তাফিজুর রহমানের শরীরের বিভিন্নস্থানে (চোখের নীচে, ঘাড়ে ও কানের পিছনে) নখের আচড় বিদ্যমান।

নিহত ভিকটিমের ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাইয়ের মাধ্যমে উক্ত নারীর পরিচয় সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। নিহত নারীর অভিভাবকত্ব কেউ দাবি না করায় তার সম্পর্কে বেশিকিছু জানা সম্ভব হয়নি। নিহত নারীর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অদ্যবধি প্রস্তুত না হওয়ার কারণে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশের প্রাথমিক বক্তব্যে এটি হত্যাকান্ড হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন ও মৃত্যুর পর তার শারীরিক লক্ষণসমূহ বিবেচনা করলে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে হিসেবে ধারনা করা যায়। ময়নাতদন্তের পর নিহত নারীর অভিভাবকত্ব কেউ দাবি না করায় আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা হয়।

উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তাফিজুর রহমানের ক্রিমিনাল রেকর্ড যাচাই করে জানা যায় ইতোপূর্বে তিনি ০৫ বার গ্রেফতার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও কক্সবাজার জেলায় ০৪টি মামলা সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এছাড়াও পূর্বে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অন্তর্গত দক্ষিনখান থানায় ২৩ জুন ২০১৮ তারিখে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা সংক্রান্ত একটি মামলা হয় এবং উক্ত মামলায় তিনি গ্রেফতার হন। তার অপরাধ ও চরিত্র বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় তিনি পেশাগতভাবে মাদক ব্যবসায়ী ও নারীসঙ্গে আসক্ত।

গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন




সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত,© এই সাইডের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ServerNeed.com