নিজস্ব প্রতিবেদক: হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নস্থ পশ্চিম উদালিয়া গ্রামের মনাই ত্রিপুরা পাড়ার শ্রী শ্রী সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরটি ভেঙে গেছে।
সরেজমিনে ওই গ্রামের মনাই ত্রিপুরা পল্লী পরিদর্শন কালে দেখা যায়, ঘূর্নিঝড় রেমাল এর প্রভাবে প্রবল বাতাশের তোঁড়ে ওই পাড়ার প্রায় ৬০/৭০ টি পরিবারের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের জন্য থাকা বাঁশ ও টিনের তৈরী একমাত্র ধর্মীয় উপাসনালয়টি (দূর্গা মন্দির) লন্ড ভন্ড হয়ে গেছে। যার কারনে সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে আসন্ন দূর্গা পূজা পালন করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
সেখানকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় এখানে আমরা অবহেলিত ছিলাম তবে গত ২০১৮ সালের ২১ আগস্ট মঙ্গলবার থেকে রোববার পর্যন্ত ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের উদালিয়া গ্রামের ত্রিপুরা পাড়ায় হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে একই পরিবারের অন্ন রায় (৫), সুমা রায় ও (৩) অন্ন বালা (৭) সহ শিমুনী ত্রিপুরা (৩) নামের ৪ জন শিশুর মৃত্যুর পর এখানকার সোনাই ও মনাই ত্রিপুরা পল্লী সকলের নজরে আসে। তারপর সরকার এখানে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু করেন। এক কথায় ওই শিশুগুলোর জীবনের বিনিময়ে এ পল্লী আজ উন্নয়নের মুখ দেখেছে।
উদালিয়া মনাই ত্রিপুরা পল্লী ছাত্র কল্যান পরিষদের সভাপতি ফুলচাঁন, সম্পাদক নির্মল ত্রিপুরা জানান, এ পল্লীর সকলের প্রচেস্টায় ওই মন্দিরটি তৈরী হযেছিলো। সেখানে হিন্দু ধর্মীয় দূর্গা পূজা, শ্যামা পূজা, লক্ষী পূজার মতো বড় পূর্জাগুলো হতো। গত কয়েকদিন পূর্বে ঘূর্নিঝড় রেমালের প্রভাবে ঝড় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় মন্দিরটি ভেঙে যায়। সামনে আসছে দূর্গা পূজা, যদি মন্দিরটি সংস্কার করা না হয় তবে এ পল্লীর সবাই আসন্ন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গা পূজার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তারা মন্দিরটি সংস্কার করে দেয়ার অনুরোধও জানিয়েছেন।
সেখানকার প্রবীন বাসিন্দা শিবচন্দ্র ত্রিপুরা (৭০), সুকুমার ত্রিপুরাসহ বেশ কযেকজন বাসিন্দা বলেন, এ পল্লীর সবাই অত্যন্ত দরিদ্র, নিজেদের টাকায় ভেঙে পড়া মন্দিরটি সংস্কার করার মতো অবস্থা নেই। তাই উপজেলা প্রশাসনসহ যথাযত কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ তিনারা যেনো মন্দিরটি সংস্কার করে দিয়ে আমাদের দূর্গা পূজা উদযাপন করার করে দেন।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য নুরুল আবছার তারেকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে ওই পল্লীর শচিন,ফুলচান ত্রিপুরা বিষয়টি জানিয়েছিল। মন্দিরের পেছনে ইটের দেয়াল দেয়া গেলে মন্দিরটির সুরক্ষা হবে বলেও জানান তিনি।
বিষয়টি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবিএম মশিউজ্জামান শুক্রবার বিকালের দিকে জানান, বিষয়টি জেনেছি, খুব শীঘ্রই মন্দিরটির সংস্কার কাজ করা হবে।