নিজস্ব প্রতিবেদক: হাটহাজারীতে হাবিবুর রহমান (৪৩) নামের এক যুবলীগ নেতাকে হত্যা ও তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল (বাইক) ছিনিয়ে নেয়ার চেস্টার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভিকটিম সংশ্লিষ্ট মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সোমবার (১৩ মে) বেলা এগারটার দিকে ভিকটিম থানায় অভিযোগ দায়েরের কথা এ প্রতিবেদক কে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রবিবার দুপুরের দিকে উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডস্থ উদালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভিকটিম ইউনিয়ন আ.যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান ওই এলাকার মুন্সি মাহামুদুল হক বাড়ীর বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সেকান্দর মিয়ার পুত্র।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান গত ২০১০ সালে একই এলাকার মালার বাড়ীর মরহুম নুরুল ইসলামের পুত্র অভিযুক্ত মহিউদ্দিনের কাছ থেকে সুদে ৫০ হাজার টাকা নেন, যার জামানত হিসাবে উক্ত বিবাদীকে ৩টি চেক প্রদান করা হয়। পরে উক্ত বিবাদীকে মূল টাকাসহ সুধের টাকা পরিশোধ করা হলেও জামানত হিসাবে দেয়া চেকগুলো হারিয়ে গেছে বলে ভিকটিমকে বিবাদী আর ফেরৎ দেয়নি। এদিকে কিছুদিন পূর্বে বিবাদী হঠাৎ করে ভিকটিমের কাছে টাকা দাবী করে বিরোধ সৃষ্টি করে। এবং বিবাদীকে পূর্বে দেয়া সেই চেক বিবাদীর হেফাজতে আছে বলে ভিকটিমের কাছে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অংকের টাকা দাবী করতে থাকে। এদিকে রবিবার বেলা ১২ টার দিকে ভিকটিম তার মুক্তিযোদ্ধা বাবার ভাতা উত্তোলন করার জন্য বয়োবৃদ্ধা মা হাছান বানু কে তার চালিত মোটরসাইকেল যোগে হাটহাজারীতে আসার পথে ফরহাদাবাদ ইউপির অর্ন্তগত উদালিয়ার দিদার মার্কেট অতিক্রম করার সময় বিবাদী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমের গতিরোধ করে তাকে কিল ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে ভিকটিম ও তার মা মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বয়োবৃদ্ধ হাসনা বানু (৫৫) কে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে দিয়ে মোটর সাইকেলটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এসময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে বিবাদীর আক্রমন থেকে ভিকটিমকে রক্ষা করে এবং তার মোটরসাইকেল গাড়ীটি বিবাদীকে নিয়ে যেতে বাধা দেন। তবে বিবাদী মহিউদ্দিন ভিকটিম কে সুযোগ সুবিধা মতো পেলে মারধর করে হত্যা করবে সহ বিবাদীর কাছে থাকা চেক এর মাধ্যমে ভিকটিমের কাছে মোটা অংকের টাকা পাবে দাবী করে তার বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা দায়ের করবে বলেও বিভিন্ন রকমের হুমকি প্রদান করে বলে অভিযোগে প্রকাশ।
ভিকটিম মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান জানান, আমার বৃদ্ধ মাকে নিয়ে ব্যাংকে যাওয়ার পথে আমার উপর আক্রমন করে বিবাদী। আমাকে স্থানীয়রা রক্ষার পর আমি মডেল থানা পুলিশ কে ঘটনা জানায়, পরে মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। তবে তার আগেই বিবাদী ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়ে।
এ ব্যাপারে বিবাদী মহিউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট। আমিও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। হাবিব আমার বন্ধু ছিলো। তাই তার বিপদের সময় একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিছিলাম। তবে ২০১১ সালে ধার নেয়া সে টাকা আজ দিবো কাল দিবো করে করে ঘুরাচ্ছে সে।
সংশ্লিষ্ট ইউপির ওয়ার্ড সদস্য তারেকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল আমি ছিলাম না। তবে পরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জেনেছি এখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। পরে পুলিশ এসে ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করে গেছেন। তারা দুজনই বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলেও জানান তিনি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হাটহাজারী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক শরীফের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমি ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। জেনেছি তারা দুজন বন্ধু ছিলেন। তবে ধার করা টাকার জন্য তাদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মডেল থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে বলেও জানান তিনি।