নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বহু পুরানো ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে এখনো রয়েছে শিক্ষক মিলনায়তন। অথচ বিদ্যালয়ের নতুন ভবনে প্রধান শিক্ষকের কক্ষের পাশে রয়েছে পরিচালনা কমিটির পরিষদ কক্ষ। যে কক্ষে সরকারিকরণের আগে সভা ও মিটিং অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু এখন সরকারি হওয়ায় সেই কক্ষ আর ব্যবহৃত হচ্ছে না। তাহলে কেন কিংবা কোন কারণে প্রধান শিক্ষক সেই কক্ষে শিক্ষক-শিক্ষিকা মিলনায়তন করছেন না? এমন অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের!
[caption id="attachment_6044" align="alignnone" width="300"] বিজ্ঞাপন[/caption]
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন শিক্ষক বলেন, এ ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষক মিলনায়তনে আতংকের মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন অনেক বছর যাবৎ। নতুন ভবনটিতে তিনি একাই থাকতে চান তার জন্য কোন শিক্ষক কিংবা মিলনায়তন দিতে চাই না। দিলে এখানে তিনি কোন অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি করতে পারবে না তাই দিতে অনিহা। এ কেমন প্রধান শিক্ষক! যে নিজে থাকেন নতুন ভবনে আর শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরকে বসান ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে!
[caption id="attachment_881" align="alignnone" width="300"] বিজ্ঞাপন[/caption]
তারা বলেন, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় এবং বছর দেড়েকের মধ্যে ভূমিকম্পে ভবনটির অনেক জায়গাতে বড় বড় ফাটল দেখা দিলে তা সিমেন্ট-বালু দিয়ে কোনো রকমের ঢেকে দেয়া হয়। এরপরও সেই ঝুঁকিপূর্ণ মিলনায়তনে চলছে আমাদের কার্যক্রম।
[caption id="attachment_8956" align="alignnone" width="300"] হাটহাজারী পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন এই বিশাল ভবনে বসেন প্রধান শিক্ষক জসীম উদ্দিন।[/caption]
তারা আরও বলেন, অনেক আগের সময় আমাদের উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী পর্যবেক্ষণ করে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেন এবং যত দ্রুত সম্ভব এখান থেকে সব রকমের কার্যক্রম সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দেন। তার ২/৩ বছর আগে ভবনটির সিড়ির পূর্ব দিকের অংশ ভেঙ্গে ফেলা হলেও পশ্চিম দিকের অংশ ভাঙ্গা হয় নাই। তখন সিড়ির পশ্চিম দিকের মারাত্মক-ভয়ঙ্কর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পূর্বদিকের শিক্ষক মিলনায়তনটি স্থানান্তর করা হয়।
[caption id="attachment_8955" align="alignnone" width="300"] হাটহাজারী পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবন[/caption]
এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভূমিকম্পের মত যেকোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহলের আশংকা।
উকিল ভবনে অবস্থিত বৃহদাকার বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সুবিশাল সভাকক্ষে অতি অনায়াসেই শিক্ষক মিলনায়তনটি স্থানন্তর করা সম্ভব ছিল। কারন স্কুলটি সরকারি হওয়ার পর আগেকার মত অত বড় পরিচালনা পরিষদ নেই, শুধু সভাপতি ও সম্পাদক সহ ২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি যা প্রধান শিক্ষকের বৃহদাকার অফিসেই পরিচালনা করা সম্ভব। তাতে শিক্ষকেরা আতংকিত না হয়ে আনন্দিত হবেন বলেও শিক্ষক ও অভিভাবক মহলের প্রত্যাশা।
[caption id="attachment_8957" align="alignnone" width="300"] পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে বসান সকল শিক্ষক- শিক্ষিকাদের[/caption]
নতুন ভবনে এত বড় স্কুল পরিচালনা কমিটির হলরুম থাকার পরও কেন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে এখনও শিক্ষক মিলনায়তন এমন প্রশ্নের উত্তর
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, কক্ষ সংকটের কারনেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই এখনও শিক্ষক মিলনায়তন রয়েছে। তাছাড়া আমাদের যে কনফারেন্স রুমে রয়েছে সেখানে বসার কোন সুযোগ নেই। খুব শীঘ্রই শিক্ষক মিলনায়তনের ব্যবস্থা করা হবে।
হাটহাজারী পার্বতী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আছেন জানেন না স্বয়ং পৌর প্রকৌশলী বেলাল আহমেদ খান। এরপর তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ কিনা তা বলতে পারব না। তবে আমি কখনো যায়নি। আপনার কাছে থেকে শুনেছি। এ বিষয়ে আমি ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলব।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোঃ শাহিদুল আলম বলেন, আমি এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলব।