নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম মহানগরীর আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার থেকে নিচে নামার পথে ম্যাক্স কনস্ট্রাকশন কোম্পানীর ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী দম্পতি নিহত হওয়ার ঘটনায় ঘাতক ট্রাক চালককে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি হতে আটক করেছে র্যাব-৭।
[caption id="attachment_1365" align="alignnone" width="300"] বিজ্ঞাপন[/caption]
শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
[caption id="attachment_881" align="alignnone" width="300"] বিজ্ঞাপন[/caption]
র্যাব ৭ এর সিনিয়র সহকারী মিডিয়া পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ৬ এপ্রিল আনুমানিক বিকেলে ৫টা ১৭ মিনিট ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী (৪৬) ও তার স্ত্রী সখিনা ফাতেমী (৩৫) (০৩ মাসের অন্তঃসত্ত¡া) দম্পতি একটি মোটর সাইকেল যোগে পাঁচলাইশ থানাধীন কাতলগঞ্জস্থ সার্জিস্কোপ হসপিটাল ইউনিট-২ তে ডাক্তার দেখানো শেষে টাইগার পাস ও আমবাগান হয়ে তাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করে।
[caption id="attachment_883" align="alignnone" width="300"] বিজ্ঞাপন[/caption]
উক্ত তারিখে বিকাল আনুমানিক ৫টা ১০ মিনিটের সময় কোতয়ালী থানাধীন লালখান বাজার ইস্পাহানি মোড় আকতারুজ্জামান ফ্লাইওভার হতে নিচে নামার শেষ স্থানে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছামাত্র রাস্তায় যানজটের কারণে সেখানে অন্য গাড়ির সাথে দাড়ায়। তখন আকতারুজ্জামান ফ্লাই্ওভার হতে ম্যাক্স কনস্টাকশনের নাম্বার বিহীন ট্রাক, যাহার নং টিএম-৮৯৬ এর অজ্ঞাতানামা ড্রাইভার ্ও হেলপারের সহয়তায় নিয়ন্ত্রনহীন ও বেপরোয়া গাড়ী চালিয়ে মোটর সাইকেলসহ ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী (৪৬) ও তার স্ত্রী সখিনা ফাতেমী (৩৫)’কে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয় এবং তাদের উপর দিয়ে দ্রæত গতিতে ট্রাক চালিয়ে দেয়। এর ফলে ঘটনাস্থলে ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী (৪৬) ও তার স্ত্রী সখিনা ফাতেমী (৩৫) দম্পতি মারা যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের বড় ভাই দূর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং ভিকটিমদের সনাক্ত করেন। কোতয়ালী থানার পুলিশ ভিকটিমদের সুরহাল করে এবং পরবর্তীতে তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উক্ত ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেট্রিক মিডিয়াসহ সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
[caption id="attachment_882" align="alignnone" width="300"] বিজ্ঞাপন[/caption]
ঘটনাটি সংগঠিত হওয়ার পর ট্রাক ড্রাইভার মোঃ আলী হোসেন (৪৯) ঘটনাস্থল হতে পলায়ন করে এবং আত্মগোপন করে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম উক্ত ট্রাক ড্রাইভারকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী চালায়। নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে ঘাতক ট্রাক ড্রাইভার মোঃ আলী হোসেন (৪৯) রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানাধীন জামালপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাহাতিমোহন গ্রামের জনৈক বিল্লাল হোসেন এর বসত ঘরে আতœগোপন করে আছে।
[caption id="attachment_1395" align="alignnone" width="218"] বিজ্ঞাপন[/caption]
গত ৯ এপ্রিল রাত ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকা হতে ঘাতক ট্রাক ড্রাইভার মোঃ আলী হোসেন (৪৯), পিতা- মোঃ ইলিয়াস হোসেন, মাতা- মমতাজ, সাং-পারনান্দুয়ালী (বিশ^াস পাড়া), পোঃ অঃ মাগুর-৭৬০০ থানা- মাগুর সদর, জেলা- মাগুর’কে আটক করে।
পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘাতক ম্যাক্স কনস্ট্রাকশনের নাম্বার বিহীন ট্রাক (টিএম-৮৯৬) এর চালক ছিল বলে স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত ড্রাইভার মোঃ আলী হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও নিম্নেবর্ণিত তথ্যাবলী পাওয়া যায়ঃ
ট্রাকটির ড্রাইভার মোঃ আলী হোসেন (৪৯) দীর্ঘ ১১ বছর যাবৎ ম্যাক্স কনস্ট্রাকশন কোম্পানীতে ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত আছে। সে গত ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম দামপাড়া ওয়াসা মোড়স্থ জামিয়াতুল ফালাহ বিশ^ মসজিদ মাঠ (ম্যাক্স কনস্ট্রাকশনের প্রজেক্ট এরিয়া)’তে যোগদান করে ও সপরিবারে বসবাস শুরু করে। সে গাড়ীর প্রধান ড্রাইভার হিসেবে জীবিকা নির্বাহ শুরু করে।
২০০৯ সালে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিআরটিএ হতে ভারী যানবাহনের লাইসেন্স পায় এবং গাড়ী চালনা শুরু করে।
ঘটনার দিন উক্ত ট্রাকের মূল চালক ছিল ড্রাইভার মোঃ আলী হোসেন (৪৯) ও হেলপার মিঠু খান (৩৫)। সেদিন মোঃ আলী হোসেন উক্ত ট্রাকটি নিয়ে আকতারুজ্জামান ফ্লাইওভার দিয়ে ম্যাক্স কনস্ট্রাকশ কোম্পানীতে যাচ্ছিল। পরবর্তীতে তার নিয়ন্ত্রনহীন ও বেপরোয়াভাবে গাড়ী চালানোর জন্য রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামের কারণে রাস্তায় দাড়ানো মোটর সাইকেলসহ ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী (৪৬) ও তার স্ত্রী সখিনা ফাতেমী (৩৫)’কে ধাক্কা দিয়া রাস্তায় ফেলে দেয় এবং তাদের উপর দিয়া দ্রæত গতিতে ট্রাক চালিয়ে দেয় এবং ঘটনাস্থলে তারা মারা যান এবং চালক ও হেলপার গাড়িটি অরক্ষিত অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায়।
[caption id="attachment_2711" align="alignnone" width="300"] বিজ্ঞাপন[/caption]
এখানে লক্ষনীয় যে, উক্ত গাড়িতে ড্রাইভার ও হেলপার ছিল এবং গাড়িটি অত্যন্ত বেপরোয়া গতি এবং নিয়ন্ত্রণহীন ছিল। দূর্ঘটনার সময় গাড়িটি (আকতারুজ্জামন ফ্লাইওভার হতে লালখান বাজারের দিকে আসতে) রাস্তার বাম পাশে থাকলেও সেটি নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ডান পাশে চলে যায়। সড়কপথে ড্রাইভারদের এই ধরনের অসর্তকতা অনভিজ্ঞতা, অবহেলিত ও খামখেয়ালিপূর্ণ আচরণ প্রতিনিয়ত কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্য প্রাণ।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।