নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামের মীরসরাই থানার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর জিয়াউল হাসান জুয়েল হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি আবুল বশর’কে মহানগরী বন্দর এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
রবিবার (১০ ডিসেম্বর) বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী মিডিয়া পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার বলেন, নিহত ভিকটিম জিয়াউল হাসান জুয়েল (২২) চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই থানাধীন মিঠানালা এলাকার মোঃ আলমগীর এর ছেলে। কিছু দিন পূর্বে নিহত ভিকটিম জিয়াউল হাসান জুয়েল এর সাথে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয় আবুল বশর এবং তার অন্যান্য সহযোগীদের সাথে বাকবিতন্ডা হলে আবুল বশর এবং তার অন্যান্য সহযোগীরা ভিকটিম জিয়াউল হাসান জুয়েল’কে হত্যার হুমকি প্রদান করে। পরবর্তীতে গত ২৯ নভেম্বর আনুমানিক রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে ভিকটিম জিয়াউল হাসান জুয়েল মীরসরাই থানাধীন রাজাপুর নতুন রাস্তার মাথায় দোকানে চা পানরত অবস্থায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আবুল বশর এবং তার অন্যান্য সহযোগীরা দেশী ধারলো অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। ভিকটিমের বাম পা কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মৃতদেহ রাস্তার পাশে পানিতে ফেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। উক্ত চাঞ্চল্যকর ও হৃদয়বিদারক ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
উক্ত ঘটনায় নিহত ভিকটিমের পিতা মোঃ আলমগীর (৫৮) বাদী হয়ে ০৪ জন নামীয় এবং ০২/০৩ জন’কে অজ্ঞাতনামা করে চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৪, তারিখ- ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ইং, ধারা- ৩২৩/৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।
উক্ত অমানবিক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বর্ণিত মামলার অন্যতম প্রধান আসামি হাজী আবুল বশর চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানাধীন কাজী পাড়া এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ২০৩০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি হাজী আবুল বশর (৬০), পিতা- মৃত জালাল আহম্মদ, সাং- রাজাপুর, থানা-মীরসরাই, জেলা-চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে সূত্রে বর্ণিত মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামি এবং অন্যান্য সহযোগী আসামিদের সহায়তায় পরস্পর যোগসাজশে পূর্ব বিরোধের জেরে দেশীয় অস্ত্র ছুরি, রামদা দিয়ে ভিকটিমের মাথায়, হাতে, পায়ে, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যা করে মৃতদেহ রাস্তা সংলগ্ন জলাশয়ে ফেলে দেয় বলে অকপটে স্বীকার করে। উল্লেখ্য, মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।