নিজস্ব প্রতিবেদক:
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও চবি এলামনাই ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু পাঠদান নয়, ডিগ্রী প্রদান নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ হলো জ্ঞানের চর্চা করা এবং এ জ্ঞানের চর্চার মাধ্যমে বিশ্বকে জয় করা।’
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭তম সমাবর্তনে তিনি এ সব কথা বলেন।
[caption id="attachment_881" align="alignnone" width="300"] বিজ্ঞাপন[/caption]
তিনি বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, প্রায় ৪১ বছর আগে আমি এখানে ছাত্র হিসেবে ভর্তি হয়েছিলাম; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমার হৃদয়ের মনিকোঠায় সবসময় সবুজ ও সতেজ। দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সবচেয়ে সুন্দর। এখানে যখন আসি তখন আমি স্মৃতিকাতর হয়ে যাই।’
তিনি বলেন, ‘অবয়ব বা অবকাঠামো উন্নয়ন সার্বিক উন্নয়ন নয়; প্রকৃত উন্নয়ন হলো পাঠদানের উন্নয়ন, জ্ঞানের উন্নয়ন এবং বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক চর্চার উন্নয়ন।’
মন্ত্রী বাৎসরিক কর্ম-ক্যালেন্ডার তৈরীর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি বেশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার-সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে শিক্ষক-গবেষকবৃন্দের গবেষণা কার্যক্রমসহ সকল অর্জন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে সক্ষম হবে পাশাপাশি বিশ্বদরবারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা শিক্ষা-গবেষণা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন এবং দেশ ও সমাজ গঠনে অপরিসীম ভূমিকা রেখে চলেছেন।
মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে ধারাবাহিক ভাবে মানসম্মত জার্নাল প্রকাশের বিষয় উল্লেখ করে বলেন, এ জার্নালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশ বিদেশের গবেষকদের গবেষণা কার্যক্রম প্রকাশিত হবে যা বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব বৃদ্ধি করবে।
মন্ত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান-গবেষণাসহ সার্বিক ভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
এর আগে সুসজ্জিত ব্যান্ড দলের ব্যান্ডের সুরের মূর্ছনায় শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। আনন্দ শোভাযাত্রা চবি বঙ্গবন্ধু চত্বরে এসে শেষ হয়। এরপর চবি বঙ্গবন্ধু চত্বরে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এবং অতিথিবৃন্দকে সাথে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও চবি এলামনাই ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
অতিথিবৃন্দ এবং উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে ৫৭তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কেক কাটেন।
উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার এর সভাপতিত্বে এবং সহকারী প্রক্টর মরিয়ম ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবদুল করিম এবং সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম, চবি সাবেক উপ-উপাচার্য ও উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ আলাউদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ, সাবেক চাকসু ভিপি মাজহারুল হক শাহ ও চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দিন,
আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু চেয়ার বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম পিএএ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবি প্রক্টর ও ৫৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য-সচিব ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, শত ব্যস্ততার মাঝেও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী চবি এলামনাই ড. হাছান মাহমুদ এম.পি. কে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ায় আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। একইসাথে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে চবি’র সবুজ ক্যাম্পাসে স্বাগত ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান।
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠান সূচিত হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি এবং অতিথিবৃন্দকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এ ছাড়া ৫৭ তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে চবি ক্যাম্পাসকে অপরূপ সাজে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে চবি সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, রেজিস্ট্রার, কলেজ পরিদর্শক, হলের প্রভোস্টবৃন্দ ও ওয়ার্ডেন, বিভাগীয় সভাপতি এবং ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা’র পরিচালক, আইকিউএসি’র অতিরিক্ত পরিচালকবৃন্দ, আইসিটি সেলের পরিচালক ও সহকারী পরিচালকবৃন্দ, সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, অফিস প্রধানবৃন্দ, অফিসার সমিতি-কর্মচারী সমিতি-কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চবি শাখার নেতৃবৃন্দ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।