নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ এলাকায় সশস্ত্র গোলাগুলি মামলার অন্যতম প্রধান চার আসামী গ্রেফতার করে র্যাব-০৭ ও র্যাব-১১।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারী) দুপুর ১টার দিকে তাদের কে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন (২২), মাঈন উদ্দিন (২৫), মোঃ জুয়েল (৩০), জামাল উদ্দিন (২৫)।
র্যাব ৭ এর সিনিয়র সহকারী মিডিয়া পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার বলেন, গত ২২-৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ দিন ব্যাপি চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানাধীন জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে প্রতিবছরের ন্যায় মুক্তিযুদ্ধ বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়। উক্ত বিজয় মেলায় আগত বিভিন্ন দোকান হতে বিভিন্ন সময় স্থানীয় অস্ত্রধারী চাঁদাবাজ মাঈন উদ্দিন @টিটু(৪২) চাঁদা দাবী করে আসছিল। বিজয় মেলা পরিষদ দোকানদারদের চাঁদা দিতে নিষেধ করলে মাইন উদ্দিন বিভিন্ন সময় মেলায় এসে আয়োজক কমিঠির সদস্যদেরকে হুমকি প্রদান করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ১ জানুয়ারি রাত আনুমানিক ৪টা ১৫ মিনিটের দিকে মেলার শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা মেলা শেষ করে বাড়ী ফেরার পথে জোরারগঞ্জ বাজারে পৌছিলে মাইন উদ্দিনের নেতৃত্বে কতিপয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের উপর আক্রমণ করে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে মেলার শৃংখলা কমিটির সদস্য ১। কাউছার আহম্মদ, ২। ইমতিয়াজ উদ্দিন(২০), ৩। মিরাজ আকবর শাকিব(১৯), ৪। সাইফুদ্দিন রিফাত(১৮), ৫। তারেক হাসান (২৫) এবং ৬। সরোয়ার হোসেন(১৮) গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। এছাড়া সন্ত্রাসীরা জোরারগঞ্জ স্কুল মাঠে মেলার শৃংখলা কমিটির আরও কয়েকজন সদস্যকে রামদা, কিরিচ, হকিষ্টিক ইত্যাদি অস্ত্র দ্বারা এলোপাতাড়ি আঘাত করে গুরুতর আহত করে এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে।
পরবর্তীতে আহত ব্যক্তিদের চিৎকারে মেলায় উপস্থিত লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা অস্ত্র উঁচিয়ে ফাঁকা গুলি করতে করতে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে মেলার শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য কাউছার আহাম্মদ @আরিফ গত ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখে চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানায় ১৭ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ৩/৩, তারিখ- ০৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ধারা- ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৪২৭/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০।
বর্ণিত মামলাটি রুজু হওয়ার পর থেকে উক্ত মামলার এজাহারনামীয় আসামীরা আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে উক্ত মামলার এজাহারনামীয় প্রধান ৪ আসামী কুমিল্লা জেলার চান্দিনা এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭ এবং র্যাব-১১ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল গত ১০ জানুয়ারি আনুমানিক ১টার দিকে বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলার এজাহারনামীয় ২, ৫, ৬ ও ৯ নং আসামী ১। আব্দুল্লাহ আল মামুন (২২), পিতা- মোস্তফা মাষ্টার, ২। মাঈন উদ্দিন (২৫), পিতা-মনির আহমদ, ৩। মোঃ জুয়েল (৩০), পিতা- আর্মি কামাল, এবং ৪। জামাল উদ্দিন (২৫), পিতা- মৃত মহিউদ্দিন, সর্ব সাং- মধ্যম সোনাপাহাড়, থানা- জোরারগঞ্জ, জেলা- চট্টগ্রামদেরকে আটক করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা স্বীকার করে তারা উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত এবং এজাহারনামীয় আসামী।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।