হাটহাজারী নিউজ ডেস্ক:
বিকাশ একাউন্ট হ্যাক এবং সরকারী কর্মকর্তা সেজে কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎকারী পৃথক ২টি মামলায় প্রতারক চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করে সিআইডি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত টানা অভিযান চালিয়ে সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইমের একটি চৌকস দল তাদের কে আটক করে।
আটককৃতরা হলেন, ১। মোঃ মোস্তাক হাওলাদার (৩০), ২। আব্দুল হালিম ফরাজী (২২), ৩। কপাল @ মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার (২৯), ৪। মো: সুজন শেখ (২২), ৫। হৃদয় মাতুব্বর @ হেলাল মাতুব্বর (২৪), ৬। মোঃ তুহিন সরদার (২৫), এবং ৭। মোঃ সজিব আকন্দ (২১)।
এডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল ও সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া, বিপিএম, পিপিএম বলেন, আধুনিক যুগে প্রযুক্তির ব্যবহারের সাথে সাথে বাড়ছে প্রযুক্তিনির্ভর প্রতারণা। বিভিন্ন ভাবে প্রতারক চক্র সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করছে। প্রযুক্তিগত অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি বদ্ধপরিকর।
সিরিয়াস ক্রাইমের একটি চৌকস দল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা এলাকা থেকে পৃথক ২টি মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারী সকাল ৭টা ২০ মিনিট হতে ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে প্রতারক চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করে।
প্রতারকরা বিকাশের কর্মকর্তা সেজে প্রবাসী কার্ড নামক মোবাইল এ্যাপস ব্যবহার করে বিকাশের বিটুবি নম্বর ক্লোন করে ভিকটিমকে ফোন দেয় এবং ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রলোভনের মাধ্যমে মোবাইলের ওটিপি নম্বর নিয়ে কৌশলে উক্ত বিকাশ এজেন্টের সর্বমোট ৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়। যার প্রেক্ষিতে লালবাগ (ডিএমপি) থানার মামলা নং-০৪, তারিখ- ০৭/০৮/২০২১খ্রিঃ, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড তৎসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৩/২৪/৩০/৩৪ রুজু হয়। এই ঘটনায় সিআইডি ১। মোঃ মোস্তাক হাওলাদার (৩০), পিতা-মোঃ ফজলু হাওলাদার ২। আব্দুল হালিম ফরাজী (২২), পিতা-আব্দুল হান্নান ফরাজী ৩। কপাল @ মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার (২৯), পিতা-পরিতোষ মজুমদার এবং ৪। মো: সুজন শেখ (২২), পিতা-নুরুল আমীন শেখ দেরকে আটক করে।
তিনি বলেন, অন্য আরেকটি ঘটনায় প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রথমে বাংলাদেশ সরকারী কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের আর্থিক অনুদান প্রাপ্ত সরকারী কর্মচারীদের নামের তালিকা বাংলাদেশ সরকারী কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের ওয়েবসাইট হতে সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে সরকারী কর্মকর্তা সেজে মোবাইলে কল দিয়ে বাংলাদেশ সরকারী কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের আর্থিক অনুদান পেয়েছে মর্মে সরকারী কর্মচারীদেরকে আশ্বস্থ করেন এবং তাদের এটিএম কার্ড থাকলে সেই কার্ডের নম্বর প্রতারকদের কাছে পাঠাতে বলে। ভিকটিমরা সরল বিশ্বাসে এটিএম কার্ডের নম্বর তাদেরকে দিয়ে দেয়। প্রতারকরা এক পর্যায়ে সুকৌশলে তাদের মোবাইল ফোনে প্রতারকদের পাঠানো ওটিপি নম্বর জেনে নেয়। এভাবে প্রতারকরা সর্বমোট ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। যার প্রেক্ষিতে রামপুরা (ডিএমপি) থানার মামলা নং- ২৭, তাং- ২৬/০৭/২০২২ খ্রিঃ, ধারা- ৪০৬/৪২০ পেনাল কোড রুজু হয়। এই ঘটনায় ১) হৃদয় মাতুব্বর @ হেলাল মাতুব্বর (২৪), পিতা- মোঃ তাজেল মাতুব্বর, ২) মোঃ তুহিন সরদার (২৫), পিতা-আবু ছালাম এবং ৩) মোঃ সজিব আকন্দ (২১), পিতা- মাইন উদ্দিন আকন্দ দেরকে আটক করেছে সিআইডি।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা প্রতারণার মাধ্যমে সরকারী কর্মচারী কল্যাণ তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থ এবং বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করেন। গ্রেফতারকৃত চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ এবং প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে বিজ্ঞ আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।