নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে প্রথমে ছাত্রীর সঙ্গে পরে তার মায়ের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকান্ড করে গৃহ শিক্ষক মামুন। এরপর দুই জনকে ব্ল্যাকমেইল করতে গিয়ে ধরা পড়লে মামলা করেন ভুক্তভোগী পরিবার। অবশেষে প্রযুক্তি ব্যবহার করে লম্পট শিক্ষককে ধরলো সিআইডি পুলিশ।
গত শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) এমন আলোচিত ঘটনাটি ঘটে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার অভিযুক্ত মোঃ মামুন(৩১) এর বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার মামলা নং-৭৬, তারিখ- ১৭/০২/২০১৩ খ্রি. ধারা- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৪ (২) / ২৬ (২) এবং পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইন ২০১২ এর ৮(১)/৮(২)/৮(৩)/৮(৫)(ক) রুজু করা হয়।
এডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া, বিপিএম, পিপিএম জানান,সুমি (ছদ্ম নাম) দশম শ্রেণীর ছাত্রী। অভিযুক্ত শিক্ষক মামুন একই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা এবং এলাকায় টিউশনি করে থাকে। সুমি যখন ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়তো সেই সময় গৃহশিক্ষক মামুন পাঠদান করাকালে গোপনে সুমির অজান্তে তার গোপন অঙ্গের (বুকের) ছবি মোবাইলের মাধ্যমে ধারন করে রাখে। উক্ত ধারণকৃত গোপন অঙ্গের (বুকের) ছবি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে কৌশলে সকলের অজান্তে অভিযুক্ত মামুন বিভিন্ন সময় সুমির শরীরের গোপন অঙ্গের আরো ছবি তুলে নিজ মোবাইলে সংরক্ষণ করে রাখে।
সুমি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় ভয়ে বিষয়টি পরিবারের কাউকে জানায়নি। সুমির অষ্টম শ্রেণীর রেজাল্ট খারাপ হওয়ার কারণে তার পরিবার অভিযুক্ত মামুনকে গৃহশিক্ষক হতে বাদ দেয়। এরপর থেকে অভিযুক্ত মামুন সুমির স্কুলে যাতায়াতের সময় পূর্বে ধারণকৃত গোপন অঙ্গের ছবি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার কু-প্রস্তাব দেয়। মামুনের দেয়া কু-প্রস্তাবে সুমি রাজি না হওয়ায় মামুন সুমির পরিবারের ছবি ব্যবহার করে সুমির মায়ের নামে একটি ফেইক ফেসবুক আইডি খুলে।
উক্ত ফেসবুক আইডি হতে মামুন সুমির মায়ের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে কু-প্রস্তাব দেয়। সুমির মা মামুনের কু-প্রস্তাবে সাড়া না দিলে সে সুমির গোপন অঙ্গের ছবি পাঠিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিতে থাকে। বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত মামুন উক্ত ফেক আইডির ম্যাসেঞ্জার হতে সুমির মাকে বিভিন্ন ধরণের অশ্লীল ও পর্ণ স্থিরচিত্র ও ভিডিও প্রেরণ করতে থাকে।
মামুনরে ধারণকৃত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের বিষয়ে সুমরি পরিবার সিআইডির সাইবার পুলিশরে নকিট অভিযোগ জানায়। সিআইডির সাইবার পুলিশ ঘটনার বিষয়ে অনুসন্ধান করে অভিযোগের সত্যতা পায়।
পরে সিআইডির সাইবার পুলিশের একটি টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তের অবস্থান সনাক্ত করে এবং গত ১৭ ফেব্রুয়ারী সকালে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ হতে অভিযুক্ত মোঃ মামুন(৩১), পিতা- মৃত বশির উদ্দিন, মাতা- আজিমন নেসা, সাং- উৎরাইল, জাজিরা, চাঁন মঞ্জিলের পিছনে, পোস্ট ও ইউনিয়ন- কোন্ডা, থানা- দক্ষিন কেরানীগঞ্জ, জেলা- ঢাকা কে ধৃত করে। এ সময় তার নিকট হতে অপরাধ কার্যে ব্যবহৃত মোবাইলটি জব্দ করে।
(তথ্য সুত্র সিআইডি পুলিশ)