নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি করে হত্যা ও ডাকাতির অভিযোগে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ইসহাক (৩৫) কে ৬ বছর পর র্যাবের হাতে আটক।
রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারী) রাউজান থানার সুলতানপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ইসহাক হাটহাজারী থানার ফটিকা গ্রামের মো. কামাল হোসেনের ছেলে।
র্যাব ৭ এর সিনিয়র সহকারী মিডিয়া পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, চান্দগাঁও থানা এলাকায় অবস্থিত র্যাবের সিপিসি-৩ এর কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল এম এ ইউছুফ এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ৫ মার্চ সন্ধ্যায় প্রবাসীর স্ত্রী পারভীন আক্তারের (৩৬) বাসায় তার ছেলেকে পড়ানোর জন্য টিউটর আসে। রাতে সোয়া ৯টায় পড়ানো শেষে শিক্ষককে বিদায় দিতে তার ছেলে দরজা পর্যন্ত যায়। এসময় তার ছেলে সিঁড়িতে মাথায় ক্যাপ পড়া অপরিচিত লোককে দেখে ভয়ে বাসার ভেতরে ঢুকে পড়ে। সাথে সাথে অজ্ঞাতনামা চার জন লোক বাসায় প্রবেশ করে পারভীন আক্তার ও তার ছেলেকে ভয় দেখিয়ে আলমারির চাবি দিতে বলে।
পারভীন আক্তার চিৎকার করার চেষ্টা করলে তার মুখ চেপে ধরে ফ্লোরে ছুড়ে ফেলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা। এমনকি তার হাত-পা শাড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে। তার শাড়ি খুলে গলায় ফাঁস ও মাথায় আঘাত করে স্বর্ণালংকার, মোবাইল, ট্যাব এবং নগদ টাকা লুট করে। পরে পারভীন আক্তারকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় তার স্বামী মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো বলেন, নুরুল আলম ও তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুরের যৌথ মালিকানায় বায়েজিদ থানার রৌফাবাদে একটি ভবনের দাড়োয়ান ছিল ওই মামলার ১ নম্বর আসামি মো. ইয়াছিন। ইয়াছিন নুরুল আলমের দূর সম্পর্কের ভাগ্নে। নুরুল আলম ও তার বড় ভাই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আবুধাবিতে ব্যবসা করেন। আব্দুস শুক্কুরই ইয়াছিনকে বিদেশ নিয়ে যায়।
সেখানে আব্দুস শুক্কুরের সাথে ইয়াছিনের মনোমালিন্য হলে ইয়াছিন দেশে চলে আসে। নুরুল আলম ও তার ভাইয়ের ক্ষতি করার জন্য ইয়াছিন তার বন্ধু মনসুরের (২৫) সাথে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা করে তাদের অপর দুই সহযোগী মো. আবু তৈয়ব ওরফে রানা (২৪) এবং মো. ইসহাকসহ (২৭) ৫ মার্চ সন্ধ্যায় পারভীন আক্তারের বাসায় ঢুকে তার শাড়ি খুলে গলায় ফাঁস ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ইয়াসিন, মনসুর এবং আবু তৈয়ব রানার উপস্থিতিতে পলাতক আসামি ইসহাকসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। রায় ঘোষণার পর থেকে ইসহাক দীর্ঘ ৬ বছর পালিয়ে বেড়ায়। পলাতক আসামি ইসহাককে ধরতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি চালায়। এক পর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টায় রাউজান থানার সুলতানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইসহাককে গ্রেপ্তার করা হয়।