নিজস্ব প্রতিবেদক:
কেরাণীগঞ্জের কলাতিয়ায় নাইট গার্ডদের বেঁধে দুর্ধর্ষ ফ্যাক্টরি ডাকাতির ঘটনায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন মালামাল ভর্তি ২টি কাভার্ডভ্যানসহ ৮ ডাকাতকে আটক করে পুলিশ।
গত বুধবার (৫ জুলাই) বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের কে আটক করা হয়।
আটককৃত ডাকাতরা হলেন, ১।মোঃ ইস্রাফিল (৩০), ২। মোঃ আমিরুল ইসলাম রাজু (৪৫), ০৩। মোঃ হামিদুল ইসলাম (৪০), ৪। মোঃ সজল মিয়া (৩০), ৫। মোঃ আজিজুল হক (৪৮), ৬। মোঃ জাহিদ মিয়া (৪০), ৭। মোঃ মনিরুল ইসলাম রতন (৩২), ৮। মোসাঃ রাশেদা বেগম (৩৩)
ঢাকা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, পিপিএম (বার) বলেন, গত ২ জুলাই রাত্র অনুমান ১২টা ৪০ মিনিটের সময় একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতচক্র কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার কলাতিয়া নিশানবাড়ী এলাকায় বাদীর মালাকানাধীন অ্যাপিজ গ্লোবাল লিঃ নামক কারখানায় কর্মরত সিকিউরিটি গার্ড কারখানার গেটে তালা লাগানোর সময় ৪/৫ জন ডাকাত তালা লাগাতে বাধা প্রদান করে এবং সিকিউরিটি গার্ডকে তাদের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে আঙ্গুলে আঘাত করে কারখানার ভিতরে প্রবেশ করে।
তিনি জানান, এরপর আরোও ৯/১০ জন ডাকাত কারখানায় প্রবেশ করে সিকিউরিটি গার্ডসহ অন্যান্য স্টাফদেরকে কালো ও মেরুন রং এর সিনথেটিক টেপ দিয়া হাত পা বাধিয়া এলোপাথারী কিলঘষি মারিয়া শরীরের ভিবিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে এবং কারখানায় কর্মরত ম্যানেজার কোথায় আছে তা জানতে চাইলে একপর্যায় তারা ডাকাতদের ভয়ে ম্যানেজারের রুম দেখিয়ে দেয়।
ডাকাতরা তখন কারখানার ম্যানেজারকে উলঙ্গ করে এলোপাথারী মারপিট করে এবং হাত পা বেধে খাটের উপর ফেলে রাখে।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে ডাকাতদল কারখানার ভিতরে থাকা কম্বল, কোটিং ফেব্রিক্স, রেইনকোর্ট ফেব্রিক্স, মেস কাপড় তন্মোধ্যে ছাই রং এর ৪০০ পিছ কম্বল মুল্য অনুমান ৭ লাখ ১০ হাজার ৮০০ টাকা, কোটিং ফেব্রিক্স ২৯২৫ মিটার মুল্য অনুমান ৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা, রেইনকোর্ট ফেব্রিক্স ২১৫০০মিটার মূল্য অনুমান ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মেস কাপর ২৫০ কেজি মূল্য অনুমান ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১টি স্ট্যান্ড ফ্যান ৭ হাজার টাকা, ০১ টি সিলিং ফ্যান মূল্য অনুমান ৩২০০ টাকা সর্বমোট লুন্ঠিত মূল্য অনুমান ৮২ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ১৪/১৫ জন আসামীদের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা রুজু হয়।
অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর উল্লেখিত ডাকাতির মূল রহস্য উদঘাটন ও ঘটনায় জড়িত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য অভিযানে অংশ গ্রহণ করেন আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ক্রাইম এন্ড অপস্ (দক্ষিণ) এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় এবং শাহাবুদ্দিন কবীর, বিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কেরাণীগঞ্জ সার্কেল এর নেতৃত্বে মোহাম্মদ মামুন অর-রশিদ,পিপিএম, অফিসার ইনচার্জ, কেরাণীগঞ্জ মডেল, মামলার তদন্তকারী অফিসার ইন্সপেক্টর (নিঃ) মুন্সী আশিকুর রহমান এবং এসআই (নিঃ) অলক কুমার দে এর সমন্বয়ে একটি স্পেশাল তদন্ত টিম দূর্ধর্ষ এই ক্লু-লেস ডাকাতির মূল রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে ঘটনার পর থেকেই ব্যাপক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন সিসিটিভি পর্যালোচনা সর্বপরি তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে, ঘটনাস্থল হতে প্রাপ্ত লেক,সেলের ব্যাপক পর্যালোচনা শেষে অত্যান্ত সল্প সময়ের মধ্যে সন্ধিগ্ধ মোবাইল ফোন সনাক্ত শেষে যাচাই বাছাই করে সন্ধিগ্ধ আসামীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এমতাবস্থায়, ডাকাতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে জনাব শাহাবুদ্দিন কবীর, বিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কেরাণীগঞ্জ সার্কেল এর সরাসরি অংশগ্রহণ ও তত্ত্বাবধানে এসআই (নিঃ) অলক কুমার দে এর নেতৃত্ত্বে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার একটি চৌকস টিম ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে উল্লেখিত ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ডাকাত ১। মোঃ ইস্রাফিল (৩০), ০২। মোঃ আমিরুল ইসলাম রাজু (৪৫), ০৩। মোঃ হামিদুল ইসলাম (৪০), ০৪। মোঃ সজল মিয়া (৩০), ০৫। মোঃ আজিজুল হক (৪৮), ০৬। মোঃ জাহিদ মিয়া (৪০), ০৭। মোঃ মনিরুল ইসলাম রতন (৩২), ০৮। মোসাঃ রাশেদা বেগম (৩৩), দেরকে ঢাকা জেলার সাভার ও আশুলিয়া থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীরা ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং তাদের নিকট হতে কারখানার লুন্ঠিত সকল মালামাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
ধৃত আসামীরা সকলে আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সক্রিয় সদস্য বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়। পলাতক অন্যান্য ডাকাত সদস্যদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত আছে।