নিজস্ব প্রতিবেদক:
নগরীতে নিরীহ মহিলাদের টার্গেট করে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের মা ও ছেলেকে আটক করে পুলিশ।
সোমবার (১০ এপ্রিল) বিশেষ অভিযান চালিয়ে বন্দর এলাকা থেকে এ প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়।
হালিশহর থানার ওসি জানান, গত ৮ এপ্রিল সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে বাদি হালিশহর থানাধীন এল-ব্লকে নানার বাসায় আসেন। পরবর্তীতে বিকাল অনুমান ৫টার ঘটিকায় তার নানার ঈদ উপলক্ষে দেওয়া একটি শাড়ি এবং ছেলের বিদেশে যাওয়ার জন্য নগদ ৫০,০০০/- টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তা পারাপারের সময় অজ্ঞাতনামা একজন মহিলা পিছন দিক থেকে এসে কৌশলে তার পথরোধ করে।
ইতোমধ্যে অজ্ঞাতনামা আরেকজন ছেলে এসে অজ্ঞাতনামা মহিলাকে আপা সম্বোধন করে বড়পোল পুলিশ বক্সের পাশে রমজান ও ঈদ উপলক্ষে একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি নগদ টাকা দান করছে মর্মে মিথ্যা সংবাদ প্রদান করে। অজ্ঞাতনামা মহিলা তাকে উক্ত স্থানে গিয়ে নগদ টাকা গ্রহণ করার জন্য বিভিন্ন রকম কথা বলে।
এক পর্যায়ে সরল বিশ্বাসে বাদি বড়পোল মোড়ে গিয়ে টাকা গ্রহণে রাজি হন। পরবর্তীতে অজ্ঞাতনামা মহিলা তার হাতের স্বর্ণের বালা ও শপিং করা জামাকাপড় দেখলে দান করবে না মর্মে জানালে তিনি অজ্ঞাতনামা মহিলাকে নিয়ে এক পরিচিত দোকানে তার হাতের বালা খুলে ভ্যানিটি ব্যাগে রেখে শপিং ব্যাগসহ দোকানদারের কাছে রাখে। তিনি অজ্ঞাতনামা মহিলা ও ছেলেসহ বড়পোল যাওয়ার সময় পথিমধ্যে পিছনে ফিরে মহিলাকে দেখতে না পেয়ে সাথে সাথে ছেলেটিকে মহিলাটি কোথায় জিজ্ঞাসা করলে মহিলাটি পিছনে রয়েছে মর্মে জানিয়ে ছেলেটি তাকে উক্ত স্থানে রেখে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর অজ্ঞাত নামা ছেলে ও মহিলাকে দেখতে না পেয়ে তার শপিং ব্যাগ ও ভ্যানিটি ব্যাগ নিতে দোকানে আসলে দোকানদার জানায় যে, অজ্ঞাতনামা মহিলা ও ছেলে তার ব্যাগগুলো নিয়ে গেছে।
এই বিষয়ে তিনি বাদি হয়ে লিখিত এজাহার দায়ের করলে হালিশহর থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়।
মামলার প্রেক্ষিতে হালিশহর থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে, এসআই সুফল কুমার দাশ এবং এসআই মোবিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলের আশপাশে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করেন। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত সুমি আক্তার এবং মোঃ শাওনকে বন্দর থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেন এবং গ্রেফতারকৃতদের হেফাজত থেকে বাদির নিকট হতে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত ১) একটি স্বর্ণের বালা, ২) নগদ ৫৫০০/- টাকা, ৩) একটি শাড়ি, ৪) দুইটি বেডশিট উদ্ধার করেন।
ধৃত ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় সহজ সরল মহিলাদের টার্গেট করে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে কিংবা চাতুরতার মাধ্যমে সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়।