নিজস্ব প্রতিবেদক: হাটহাজারীতে অভিনব কৌশলে প্রতারনার ফাঁদ পেতে অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তার ৬৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়া সেই প্রতারককে স্থানীয়দের সহায়তায় ওই ব্যাংক কর্মকর্তারা গাড়িসহ আটক করে মডেল থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে অগ্রণী ব্যাংক হাটহাজারী শাখার ব্যবস্থাপক সায়দুর রহমান ওই প্রতারককে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আটক শফিকুর রহমান নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানার রশিদুর রহমানের পুত্র।
জানা যায়, সোমবার (২২ এপ্রিল) এক ব্যক্তি একটি দামি প্রাইভেট কার নিয়ে পৌরসভার জেলা পরিষদ ডাক বাংলোয় এসে নিজেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক পরিচয় দেন। এই সময় ডাক বাংলোর তত্ত্বাবধায়ক তার পরিচয় শুনে তার নাম রেজিস্ট্রারে তালিকাভুক্ত করতে বললে তিনি ঘন্টাখানেকের মধ্যে চলে যাবেন বলে নাম রেজিস্ট্রারে লেখার প্রয়োজন নেই বলে জানান তত্ত্বাবধায়কে। এ সময় তার হুমকিতে তত্ত্বাবধায়ক ঘাবড়ে গিয়ে ওই প্রতারককে রেজিস্ট্রারে এন্টি ছাড়াই রুমে ঢুকতে দেন।
তবে তত্ত্বাবধায়ক বাদল বিষয়টি অজ্ঞাত কারণে ইউএনও বা প্রশাসনের কাউকে তখনও জানাননি। পরে কথিত প্রতারক পৌরসভার বাস স্টেশন এলাকার অগ্রণী ব্যাংকের ম্যানেজারকে ফোন করে নিজেকে সেই ব্যাংকের পরিচালক পরিচয় দিয়ে বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে তার ৬৫ হাজার টাকা দরকার। টাকাগুলো নিয়ে জেলা পরিষদের ডাক বাংলোয় দ্রুত চলে আসার ‘নির্দেশ’ প্রদান করেন তিনি।
পরে ব্যাংকের উক্ত কর্মকর্তা ওই প্রতারককে তার ব্যাংকের পরিচালক ভেবে ৬৫ হাজার টাকা ডাক বাংলোয় নিজে গিয়ে দিয়ে আসে। তবে টাকাগুলো দিয়ে আসার পর ব্যাংকের ওই কর্মকর্তার সন্দেহ হলে প্রতারককে ফোন করেন। কিন্তু তার হদিস আর পাওয়া যায়নি।
এরপর ওই প্রতারক বুধবার অগ্রণী ব্যাংক রাউজান শাখার ম্যানেজারকে একই কায়দায় ফোন করে টাকা চাইলে তিনি বিষয়টি ব্যাংকের হাটহাজারী শাখা ম্যানেজারকে জানালে ব্যাংক ম্যানেজার তার শাখার স্টাফদের নিয়ে হাটহাজারী সদরের বাস স্টেশন এলাকায় মহাসড়কে পাহারা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড আলী হায়দার দূর থেকে গাড়ির নম্বর দেখা মাত্র সবাইকে সতর্ক করে গাড়িটি আটকাতে আরেক সিকিউরিটি গার্ড নেজাম উদ্দীন, মাঠ কর্মকর্তা টিটু কুমার শীলসহ ব্যাংকের সকল স্টাফরা রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে গাড়িটি (চট্ট মেট্টো -প- ১৩-১২৩৬) থামাতে সংকেত দেয়। এসময় প্রতারক চক্রের হোতা দ্রুত গতিতে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করলেও বাস স্টেশনের তীব্র যানজটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। যানজটে আটকে গেলে সবাই গাড়িটির সামনে দাঁড়িয়ে চালকসহ ওই প্রতারককে গাড়ি থেকে টেনে বের করার চেষ্টা করার সময় ব্যাংকের তিনজন স্টাফ টিটু কুমার শীল, আলী হায়দার এবং নেজাম উদ্দীন হাতে এবং পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এসময় উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় গাড়িসহ প্রতারক চক্রের হোতা এবং চালককে আটক করে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে আটকের ব্যাপারে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) মো. ওমর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।