নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা থেকে অপহৃত ৯ বছরের নাবালিকা মেয়েকে চট্টগ্রাম বিমানপথে দুবাই পাচারের সময় হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের দম্পতি এবং উপজেলার ছিপাতলী ইউনিয়ন থেকে বৃদ্ধসহ তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতারসহ ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৭।
শনিবার (২৮ জানুয়ারী) মধ্যে রাত ২টার দিকে হালিশহর থানাধীন চৌধুরীপাড়া এলাকার একটি বাসা থেকে দম্পতিকে এবং হাটহাজারী উপজেলার ছিপাতলী ইউনিয়ন থেকে বৃদ্ধ কে আটক করা হয়।
র্যাব ৭ এর সিনিয়র সহকারী মিডিয়া পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার বলেন, অপহৃত ভিকটিম ৯ বছর বয়সের এবং ঢাকা মহানগরীর মিরপুর এলাকায় পঞ্চম শ্রেণীতে পড়য়া একজন ছাত্রী। কিছুদিন পূর্বে দুবাই প্রবাসী মোঃ শহিদুল করিম এর সাথে ভিকটিমের বড় বোনের বিয়ে হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার জানতে পারে, শহিদুল বাংলাদেশ থেকে দুবাই নারী পাচারকারী চক্রের সাথে জড়িত। শহিদুল ভিকটিমের বোনকে বিয়ের নামে দুবাই নিয়ে গেলেও দুবাই নাইট লাইফের কাছে তাকে বিক্রি করে অন্য দেশে থাকতে শুরু করে। কিন্তু ওই পাচারের পরপরই সে ভিকটিমকেও বিদেশ পাচার করার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। গত ৩ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে ভিকটিম মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও ভিকটিম বাড়ি ফিরে না আসায় ভিকটিমের মা এবং তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখোঁজি করেন।
অনেক খোঁজাখোঁজি করার পর এক সময় ভিকটিমের পরিবার জানতে পারেন আসামী শহিদুল এবং তার সহযোগী সাকিব এবং নুরুজ্জামানের সহায়তায় ভিকটিমকে বিদেশ পাচারের উদ্দেশ্যে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদি হয়ে ৩ জনকে আসামী করে ঢাকা মহানগরীর শাহ আলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ২৩ তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ, জিআর নং ২৩, তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রিঃ, ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০২০ (সংশোধিত ২০২৩) এর ৭/৩০।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে বর্ণিত ঘটনার সাথে সন্দিগ্ধ জড়িত ও আশ্রয়দাতা ২ জন আসামী চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানাধীন চৌধুরীপাড়া এলাকার একটি বাসায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ২৮ জানুয়ারি ২টার আসামী ১। আবু সুফিয়ান রানা (৩১), পিতা-মৃত তোফায়েল আহমেদ এবং ২। শারমিন কাওসার হান্না (২২), স্বামী-আবু সুফিয়ান রানা, উভয় সাং-ফরহাদাবাদ, থানা-হাটহাজারী, জেলা-চট্টগ্রামদ্বয়কে গ্রেফতার করে।
আটককৃত আসামীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় ৩নং আসামী নুরুজ্জামান (৫৫), পিতা-মৃত আবুল হোসেন, সাং-চিপাতলী, থানা-হাটহাজারী, জেলা চট্টগ্রামকে ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে হাটহাজারীর চিপাতলী এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামী নুরুজ্জামানকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এবং তার দেয়া তথ্য মতে চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া থানামীন নলুয়া এলাকার একটি বাড়ি হতে ২৮ জানুয়ারি সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা অন্যান্য সিন্ডিকেট সদস্যদের সহায়তায় অসহায় মেয়েদের বিভিন্নভাবে ভালো চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে দুবাই পাচার করত। নাবালিকা শিশু ভিকটিমকে অপহরণ করে তারা দুবাই পাচার করার জন্য চট্টগ্রাম ও আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রেখেছিল।গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।