নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজের স্টাফদের ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিন্দা জ্ঞাপন এবং গৃহীত ব্যবস্থা প্রসঙ্গে।
সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে চবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার দিবাকর বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ১৪ মার্চ শিক্ষাসফর শেষে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন হতে টেকনাফ ফেরার পথে চবি’র অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজের সুপারভাইজার ও স্টাফদের ন্যাক্কারজনক হামলার ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজে করে শিক্ষা সফরে সেটমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা করে। পরবর্তীতে ১৪ মার্চ সেন্টমার্টিন ভ্রমণ শেষে একই জাহাজে করে ফেরার সময় বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজের সুপারভাইজার এবং স্টাফগণ নজিরবিহীনভাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষা সফরে যাওয়া শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করছে। একইসাথে সংশ্লিষ্ট জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ এবং জড়িত প্রত্যকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে। উল্লেখ্য যে উক্ত ঘটনার পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
উক্ত ঘটনার সংবাদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবহিত হবার সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ও র্যাব এর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উক্ত ঘটনায় আক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সম্মানিত শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দের যথাযথ নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে অর্থনীতি বিভাগের উক্ত শিক্ষাসফরে অংশগ্রহণকারী ও আহত সহকারী অধ্যাপক এ. এফ. এম. ফজলে রাব্বি চৌধুরী বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় এজাহার দায়ের করলে টেকনাফ মডেল থানায় নিয়মিত মামলা নং ৪২(৩)২৩ তারিখ রুজু করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্বাস করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর এ ধরণের হামলা ও উক্ত জাহাজ কর্তৃপক্ষের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং রাষ্ট্রকাঠামোর প্রচলিত আইনি ব্যবস্থার উপরই আঘাত।
উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে উক্ত ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে এবং অনতিবিলম্বে জড়িত আসামীদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করতে জোর দাবি জানায়।
গত ১৪ মার্চ সংঘটিত দূর্ঘটনার বিষয় আইনানুগ ও কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের সম্মানিত বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসছে এবং এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনারের সাথে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যেই সাক্ষাৎ করেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উক্ত ঘটনায় আহত শিক্ষকমন্ডলী ও শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় এবং দায়েরকৃত মামলাটির পরিচালনার সমূদয় ব্যয়ভার গ্রহণ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এছাড়া আগামী ২২ মার্চের পর যেকোন দিন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের মধ্যস্ততায় বে-ক্রুজ ইন্টারন্যাশনাল জাহাজের মালিক কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠকে বসে চবি প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দাবিসমূহ উপস্থাপন করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে।