নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইতিহাসের অন্ধকারতম অধ্যায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভোরে সূর্য উঠার আগেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমণ্ডি ৩২ নং সড়কের নিজ বাসভবনে সেনাবাহিনীর কতিপয় উচ্চাভিলাষী দুষ্কৃতিকারী, লোভী, বিশ্বাসঘাতকদের হাতে শহীদ হন।
[caption id="attachment_1365" align="alignnone" width="300"] বিজ্ঞাপন[/caption]
রক্তে ভেসে যায় ৩২ নম্বর বাড়ির সিঁড়ির প্রতিটি ধাপ। এরপর ঘাতকরা একে একে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, মেজ ছেলে শেখ জামাল ও নব পরিণীতা দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও পারভীন জামালকে।
[caption id="attachment_881" align="alignnone" width="300"] বিজ্ঞাপন[/caption]
নির্মমভাবে হত্যা করা হয় দশ বছরের ছোট ছেলে, শিশু শেখ রাসেলকে। হত্যা করা হয় ব্রিগেডিয়ার জামিল আহমেদ, স্পেশাল ব্রাঞ্চের সহকারী দারোগা সিদ্দিকুর রহমান, সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হক, মিন্টু রোডের বাসায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, ছেলে আরিফ সেরনিয়াবাত, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর বড় ছেলে সুকান্ত আব্দুল্লাহ বাবু, আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত ও কিশোর ভাগিনা নান্টূ এবং বেড়াতে আসা আত্মীয় আব্দুল নঈম খান রিন্টু সহ আরও দু-জন অতিথিকে।
এছাড়াও কাজের লোক পটকা এবং লক্ষ্মীর মাকেও হত্যা করে তারা। ঘাতকরা শেখ ফজলুল হক মণির ধানমণ্ডির বাসায়ও আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করে শেখ মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণিকে। ঐ দিন ঘাতকের ব্যবহারিত কামান থেকে ধানমণ্ডির ৩২ নং এর বাসায় নিক্ষেপকৃত শেল ছুটে গিয়ে আঘাত করেছিল মোহাম্মদপুরের নিরীহ মানুষের উপর সেখানে প্রাণ হারায় আরও ১৩ জন।
এ জনপদের স্বাধীনতাবিরোধী লোভী ও স্বার্থান্বেষী মহল হত্যা করলো এমন একজন মহান নেতৃত্বকে যার শূন্যতা পূরণ অসম্ভব। যিনি স্বাধীনতা পরবর্তী এক বছরের মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে একটি মৌলিক ও পরিপূর্ণ সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আবার নিজ ভূমে পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দী হয়ে স্বপ্নহীন জাতিতে পরিণত হলো স্বাধীন বাঙালি।
বর্তমান প্রজন্মকে মনে রাখতে হবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শারীরিক বিদায় হলেও তাঁর আদর্শ, আত্মত্যাগ, মেধা, মনন, চিন্তা ও দর্শনের মৃত্যু হয় নি ইনশাআল্লাহ, হবেও না। তিনি স্বাধীনচেতা বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা।
কেননা তিনি বাঙালি জাতির জন্য স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র-যন্ত্র এবং তা বাস্তবায়নের সুদুরপ্রসারি পরিকল্পনা ও অসংখ্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব সৃষ্টি করে গেছেন। যাদের নেতৃত্ব আর অক্লান্ত পরিশ্রমে নানান চক্রান্তের পরেও আজও স্বাধীন বাংলার লাল সবুজের পতাকা বিশ্ব সভায় বিশ্বময়।
আমাদের বিশ্বাস, যতদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাতে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুদৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ এক অপার বিস্ময়ের নাম। এক সময়ের তথাকথিত তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশই আজ বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল।
আজকের এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি মহাকালের মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং ১৫ই আগস্টে নির্মমভাবে নিহত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ তাঁর পরিবারের সকল সদস্যবৃন্দদের মহান স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছেন হাটহাজারী অনলাইন প্রেসক্লাব ও দৈনিক হাটহাজারী নিউজ পরিবার।