নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার মোঃ হক সাবসহ ৪ জন ডাকাতকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভোর ৫টায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের কে আটক করা হয়। এ সময় বিপুল পরিমান লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার এবং একটি পিকআপ জব্দ করা হয়।
[caption id="attachment_10165" align="alignnone" width="252"] উদ্ধার করা দেশীয় অস্ত্র সমূহ[/caption]
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী মিডিয়া পরিচালক মোঃ নুরুল আবছার বলেন, লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে জানতে পারে যে, কতিপয় দুষ্কৃতিকারী ডাকাত দল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন স্থানে ডাকাতির কারনে এলকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। উক্ত অভিযোগ প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। নজরদারির এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, কতিপয় ডাকাতদল একটি পিকআপ যোগে আগ্নেয়াস্ত্র এবং ডাকাতির মালামালসহ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে আজ ৯ সেপ্টেম্বর ভোর টায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন বারইয়ারহাট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাকা রাস্তার উপর একটি অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে গাড়ী তল্লাশী শুরু করে। এ সময় একটি সন্দেহজনক পিকআপ গাড়িকে থামানোর সংকেত দিলে উক্ত পিকআপটি না থামিয়ে কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা কালে আসামী ১। মোঃ হক সাব প্রকাশ মাদক সম্রাট (২৩), পিতা- শাহআলম, সাং-খিলমুরারী, থানা-জোরারগঞ্জ, জেলা-চট্টগ্রাম ২। মোঃ সাইফুল ইসলাম @ রনি (২৪), পিতা- মোঃ আলমগীর হোসেন @ আলম, সাং- হিংগুলী, থানা- জোরারগঞ্জ, জেলা- চট্টগ্রাম, ৩। চাঁন মিয়া (২৮), পিতা-আঃ রহিম, সাং- চরপাড়া, জেলা- নারায়নগঞ্জ এবং ৪। সিজিল মিয়া @ সোহাগ (৩০), পিতা- মৃত তারা মিয়া, সাং- আকতাপাড়া, থানা- দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জেলা-সুনামগঞ্জ’কে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীদের হেফাজতে থাকা এবং তাদের নিজ হাতে বের করে দেয়া মতে ০১টি আগ্নেয়াস্ত্র, ০১টি কার্তুজ, ৩৪টি অটোরিক্সার ব্যাটারি, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি এবং ০১টি পিকআপ জব্দসহ আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ডাকাত দলটি হাইওয়ে এবং আন্তঃজেলা ডাকাতির সাথে জড়িত। এ দলের বেশিরভাগ সদস্য চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি করে মালামালসহ ঢাকার উদ্দেশ্যে গমন করে। ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘরমুখী সাধারন মানুষের চলাচলের স্থানে পথচারীকে আটক করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদেরকে জিম্মি করে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা-পয়সা ছিনতাই/ডাকাতি করে থাকে বলে নিজ মুখে স্বীকার করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বর্ণিত ডাকাত দলের সদস্যরা সেডান/মাইক্রোবাস এ ধরনের যানবাহন থামিয়ে ডাকাতি করার পরিকল্পনা করে। তারা আকস্মিক আক্রমণ করে যত দ্রুত সম্ভব সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত দলের নেতা জানায়, বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষ প্রায়ই মোটা অংকের টাকা নিয়ে চলাচল করে, বিশেষ করে যারা ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত করে তারা ডাকাত দলের মূল টার্গেট।
উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত ০১ নং আসামী মোঃ হক সাব প্রকাশ মাদক সম্রাট এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ এবং সীতাকুন্ড থানায় ডাকাতি, মাদক, চুরি, হত্যার চেষ্টা এবং অস্ত্র আইনসহ সর্বমোট ২০ টি মামলা এবং ০২ নং আসামী মোঃ সাইফুল ইসলাম @ রনি এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার জোরারগঞ্জ থানায় চুরি, হত্যার চেষ্টা ও মাদকসহ ০৪ টি মামলর তথ্য পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ।