মোঃ আতাউর রহমান মিয়া: “বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ” নামে পরিচিত হালদা নদীতে কার্পজাতীয় মাছের ভরা প্রজনন মৌসুম। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট উচ্চ তাপমাত্রা ও ব্রজসহ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় হালদা নদীতে ডিম ছাড়ার অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে না ফলে ডিম ছাড়ছেনা মা মাছ জানান হালদার গবেষক ড.মো. শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মেজর কার্পজাতীয় মাছের অনুকূল তাপমাত্রা হচ্ছে (২২-৩০) ডিগ্রী সেলসিয়াস তবে এরা অল্প সময়ের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ ডিগ্রী সে. পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। মেজর কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন আচরণ পানির তাপমাত্রার সাথে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। প্রজননের উপর উচ্চ তাপমাত্রার নিম্নলিখিত নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে:-প্রজনন চক্র/ সময় দেরি, প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস, ডিম্বাণুর পূর্নতা প্রাপ্তিতে দেরি, হরমোনের ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ায় ডিম উৎপাদন কমে যাবে এবং কম সংখ্যক মা মাছ প্রজনন পরিপক্কতা অর্জন করে।
পাশাপাশি উচ্চ তাপমাত্রা নদীর বাস্তুতন্ত্রের খাদ্য শৃঙ্খলকেও প্রভাবিত করতে পারে। উচ্চ তাপমাত্রার প্রতি সংবেদনশীল অনেক জলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণী মারা যেতে পারে।
ফলে কার্প জাতীয় মাছের খাদ্য উৎস কমে তাদের বৃদ্ধির হার এবং সামগ্রিক নদীর বাস্তুতন্ত্রের স্বাস্থ্য ব্যবস্হাকে হ্রাস করতে পারে। এছাড়াও উচ্চ তাপমাত্রায় মাছের বিপাকীয় হার বৃদ্ধির ফলে অক্সিজেনের চাহিদা বৃদ্ধি পায় ফলে পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস পেয়ে শ্বসন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে প্রজনন সাফল্যকে হ্রাস করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, তবে আশারবাণী হচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বিদ্যমান উচ্চ তাপমাত্রা আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে আসবে ৷ বর্তমানে হালদা নদীর বিভিন্ন স্পনিং পয়েন্টে মা মাছের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। যদি বজ্রপাতসহ পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি হয় এবং পাহাড়ী ঢল নেমে পানিতে তীব্র স্রোত সৃষ্টি করে এবং পানির তাপমাত্রা কমে (২৭-২৯) ডিগ্রী সে. ও বিভিন্ন ভৌত ও রাসায়নিক প্যারামিটারের মিত্রস্ক্রিয়তায় হালদা নদীতে কার্পজাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার প্রাকৃতিক অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং মা মাছ ডিম ছাড়ে। পরিবেশ অনুকুলে থাকলে আগামী পূর্ণিমার ” জো ”তে অর্থাৎ মে মাসের প্রথম সপ্তাহে (২-৭ তারিখ) মা মাছের ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।