হাটহাজারী নিউজ ডেস্ক:
কোতোয়ালী থানার হাজারী গলি থেকে খোরশেদ আলম নামে এক বীমা কর্মকর্তাকে অপহরণের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (১৬ অক্টোবর) রাতে নগরের হালিশহর থানার মুহুরি পাড়া ও রঙ্গীপাড়া থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় অপহৃত খোরশেদ আলমকে (৫৯) উদ্ধার করা হয়। তিনি নগরের জুবলী রোডের একটি বেসরকারি বীমা কোম্পানির কর্মকর্তা। তার বাসা নগরের পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রেফতার ৪ জন হলেন- সন্দ্বীপ থানার মুছাপুর মনু মিয়ার বাড়ির আবুল কালামের ছেলে মো. জাহেদ আলম (১৮), কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার বায়রাবাজার ছিমবি, মুন্সি বাড়ির মৃত মো.আদিল হোসেনের ছেলে মো. বেলাল হোসেন ইমন (১৮), একই জেলার লাকসাম থানার পচ্ছিঙ্গা গাজীশাহ মাজারের পাশে আব্দুল আজিজ সরদারের বাড়ির মৃত ফজল হকের ছেলে মো. কাউছার (১৯) ও নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর থানার আমুল্লা মিয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের বাড়ির মো. হেলালের ছেলে মো.ইমন (১৮)।
কোতোয়ালী থানার ওসি জাহিদুল কবির জানান, হাজারী গলির মুখে থেকে গত রোববার দুপুর একটার দিকে আসামিরা খোরশেদুল আলমকে অপহরণ করেন। এরপর পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ, বিকাশ নম্বর ও তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে আসামিদের শনাক্ত করে নগরের হালিশহর থানার রঙ্গীপাড়া ছোট মসজিদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাহেদ ও বেলালকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরের মুহুরী পাড়া এলাকায় একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে মো. খোরশেদুল আলমকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত মো. কাউছার ও মো. ইমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মনোয়ার ও ইয়াছমিন আক্তার মনি নামে দুইজন কৌশলে পালিয়েছেন। তাদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে ।
তিনি জানান, আসামিরা দীর্ঘদিন যাবৎ পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাড়ায় চালিত সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। তারপর তারা সাধারণ পথচারীদের মধ্যে সাদাসিধে টাইপের পথচারীদের টার্গেট নির্ধারণ করে অপহরণ করে তাদের আস্তানায় নিয়ে যায়। আস্তানায় নিয়ে যাওয়ার পর অপহৃত ব্যক্তির সঙ্গে মেয়ে দিয়ে বিভিন্ন অশ্লীল ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে।
অপহৃতকে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোমিনুল হাসান জানান, গত রোববার দুপুর দিকে ব্যক্তিগত কাজ শেষে হাজারী গলি থেকে বের হয়ে কেসি দে সড়কে আসেন খোরশেদুল আলম। বাসায় যাবার জন্য একটি অটোরিকশায় ওঠেন। পথে অটোরিকশা থামিয়ে আরও দু’জন সেখানে উঠে যায়। এ সময় তারা খোরশেদুলকে জিম্মি করে হালিশহরে মুহুরীপাড়ায় একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যায়।
সেখানে মনোয়ার, ইমন ও কাউছার মিলে এক নারীর সঙ্গে তার আপত্তিকর ছবি তুলে সেগুলো ফেসবুকে প্রচারের ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। পরে চার লাখ টাকায় নেমে আসে। খোরশেদুল এত টাকা দিতে পারবেন না জানালে দুই লাখ টাকা পেলে তাকে ছেড়ে দিয়ে আপত্তিকর ছবিগুলো মোবাইল থেকে মুছে দিতে সম্মত হয়। এরপর তিনি তার জামাতা মোরশেদুল আলমকে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে ৪৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন।