নিজস্ব প্রতিবেদক:
কর্নফুলী থানাধীন শাহমিরপুর বাদামতল এলাকার একটি বসত বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে ২ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা ও ২টি ওয়ান শুটারগান এবং ৪ রাউন্ড কার্তুজসহ আজম উদ্দিন চৌধুরী ও সৈয়দ নুর নামে দুই জনকে আটক করে র্যাব।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে দুইজনকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, মোঃ আজম উদ্দিন চৌধুরী (২৬), পিতা-মৃত সুলতান আহমেদ, এবং মোঃ ছৈয়দ নুর প্রকাশ রুবেল হোসেন (৩০), পিতা- মোঃ আব্দুল নুর, উভয় সাং-শাহ মীরপুর, থানা-কর্নফুলী, চট্টগ্রাম।
র্যাব ৭ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এমএ ইউসুফ চৌধুরী বলেন, ছিলেন মাদকের বাহক, হতে চেয়েছিলেন বড় ডিলার। চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্ণফুলীতে মাদক ব্যবসায়ী আজমের বাসার গুদামঘরের মাটি খুঁড়ে ২ লক্ষ ২০ হাজার পিস ইয়াবা ও দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
তিনি বলেন, র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি বিশেষ আভিযানিক দল বিগত ৪/৫ দিন যাবৎ টেকনাফ-উখিয়াসহ বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান বিদেশী মদ, বিয়ার, স্মাগলিং পণ্য-সিগারেটের বিশাল চালান জব্দ করতে সক্ষম হয়। সেই সাথে উক্ত এলাকা থেকে ইয়াবা ট্যাবলেটের একটি বড় চালানও আটক করতে সক্ষম হয়। বর্ণিত ঘটনা হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মহানগরীর মাদক ডিলার সম্পর্কে সম্যক ধারনা লাভ করে।
এরই প্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার ১৭ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্নফুলী থানাধীন শাহমিরপুর বাদামতল এলাকার একটি বসত বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রামের মাদক সম্রাট মোঃ আজম উদ্দিন চৌধুরী (২৬), পিতা-মৃত সুলতান আহমেদ, এবং মোঃ ছৈয়দ নুর প্রকাশ রুবেল হোসেন (৩০), পিতা- মোঃ আব্দুল নুর, উভয় সাং-শাহ মীরপুর, থানা-কর্নফুলী, চট্টগ্রাম মহানগরীদ্বয়কে আটক করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে, বসত বাড়ীর পাশে একটি গুদাম ঘরের মাটির নীচে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় আনুমানিক ২ লক্ষ ২০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং পানির নীচে বিশেষ কায়দায় পলিব্যাগে করে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় ২টি ওয়ান শুটারগান ও ৪ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধারসহ আসামীদ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ আজমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় প্রায় ৫/৬ বছর পূর্ব হতে সে ইয়াবা ব্যবসার সাথে যুক্ত রয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় সে মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট এর ক্যারিয়ার বা সরবরাহের কাজ করত পরবর্তীতে ইয়াবা ট্যাবলেটের বড় চালান প্রাপ্ত হয়ে তার বসতবাড়ীর টিনশেড বেষ্টিত একটি ঘরের মধ্যে মাটিতে গর্ত করে বস্তায় মোড়িয়ে ইয়াবা ট্যাবলেট এবং দেশীয় তৈরী অস্ত্র ও গোলাবারুদ মাটি চাপা দিয়ে মজুদ করে রাখত।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে সেগুলো থেকে খুচরা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের নিকট ছোট ছোট প্যাকেটে করে ইয়াবা ট্যাবলেটের চালান সরবরাহ করত। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী জানায়, উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো দিয়ে তারা স্থানীয়ভাবে এলাকায় প্রভাব বিস্তার, প্রতিপক্ষকে ভয় দেখানো এবং মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় ও বহনে নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে ব্যবহার করত। বর্ণিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সে বাশঁখালীর কথিত অস্ত্র ব্যবসায়ী শহিদ এবং ছৈয়দের নিকট হতে সংগ্রহ করত বলে জানায়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ সাগরপথে মায়ানমার হতে সরবরাহকারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাদক দ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট সংগ্রহ করে পরবর্তীতে তা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট খুচরা ও পাইকারীভাবে বিক্রয় করে আসছে। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।